বাজেটে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরী দাবির উপর ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে তারা বলেন, গণপরিবহনে সব থেকে সাশ্রয়ী রেল। আগে মন্ত্রী-এমপিরাও ট্রেনে যাতায়াত করতেন। কিন্তু ১০টার ট্রেন কয়টায় আসে, এটা এখনো পরিবর্তন হয়নি। ষ্টেশনগুলোতে আধুনিককায়ন হয়নি। যাত্রী সেবার কোন ব্যবস্থা নেই। যে কারণে মানুষ আস্থা হারাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেও রেলের উন্নয়ন হয়নি। অথচ যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে রেলের উন্নয়ন জরুরী। জনস্বার্থে রেলের প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
দেশের প্রতিটি রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি, সময়মত ট্রেন না আসা, ট্রেনের টয়লেট ও ওয়েটিং রুম নোংরা থাকে, রেলের জমি দখল হয়ে যাওয়াসহ রেলের নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করে তারা বরাদ্দের বিরোধীতা করেন।
জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে বৃহস্পতিবার ২০১৮-২০১৯ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে দায়মুক্ত ব্যয় ব্যতিত অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাব এনে এই বিরোধীতা করেন এমপিরা।
জবাবে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, রেল কোন মন্ত্রণালয় ছিলো না। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিভাগ ছিলো। বিএনপি আমলে রেলপথকে একেবারে অবহেলা করে এটা তুলে দেবার চেষ্টা করা হয়েছিল। একদিনে ১৩ হাজার কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেক দেয়া হয়েছিল। রেলস্টেশন বন্ধ, রেলপথ বন্ধ করে রেলকে ধ্বংসের পরিকল্পণা করেছিলেন খালেদা জিয়া সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই রেলকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন রেলপথ মন্ত্রণালয় করেছেন। এরপর থেকে রেলের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন শুধু উত্তরবঙ্গে ২৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। কর্ণফূলি নদীর উপর রোড কাম রেল ব্রীজ করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অত্যাধুনিক রেল ষ্টেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইন যাবে। গোপালগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন দ্রুতই উদ্বোধন হবে। অন্যান্য জেলাতেও রেলের কাজ চলছে। দেশের একটি জেলাও রেল নেটওয়ার্কে বাইরে থাকবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। আশা করি অবিলম্বে রেলের প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে। রেল বিশ্বের অন্য যে কোন দেশের কাতারে চলে যাবে চলে যাবে।
বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টি ফকরুল ইমাম, আবদুল মুনিম চৌধুরী, সেলিম উদ্দীন, নুরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম ওমর ও স্বতন্ত্র সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী। পরে কণ্ঠভোটে তাদের ছাঁটাই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৫৯:০৪ ২৫৩ বার পঠিত