‘ঈদেও বউ-ছাওয়াক কিছু দিবার পাই নাই’

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ‘ঈদেও বউ-ছাওয়াক কিছু দিবার পাই নাই’
সোমবার, ১ মে ২০২৩



‘ঈদেও বউ-ছাওয়াক কিছু দিবার পাই নাই’

মোস্তাফিজার রহমান রংপুর প্রতিনিধি: ‘হামরা ভালো নাই বাহে। এবার ঈদেও বউ ছাওয়াক কিছু দিবার পাই নাই। হাতত টেকা না থাকিলে কী দিয়ে কিনি দিমো। সবকিছুর যে দাম, সারা দিন খাটিয়ে যে টেকা কামাই করি সেটা দিয়ে চাল, তেল, নুন কিনতেই শ্যাষ হয়য়া যায়। না পাই ভালো খাওয়ার, না পাই ভালো কাপড়চোপড় কিনবের।’
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রংপুর পালিচড়ার নির্মাণশ্রমিক হোসেন মোহাম্মদ দুলাল। রোববার (৩০ এপ্রিল) রংপুর শহরের লালবাগে বহুতল ভবন নির্মাণে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার ফাঁকে এই প্রতিবেদককে তার জীবনজীবিকার কথা জানান। তিনি বলেন, শ্রমিক হিসেবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেটে যে টাকা পাওয়া যায় তার মধ্য থেকে ১০০ টাকা দিয়ে দুপুর ও বিকেলে খাওয়াদাওয়া করতেই শেষ হয়ে যায়। বাকি টাকা দিয়ে বাজার করার পর তেমন কিছু আর থাকে না। পাঁচজনের সংসারে দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, মাসিক কিস্তি, বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীর ভরণপোষণ দেওয়া খুব কষ্ট হয়ে যায়। মাসে কাজ থাকে ২০ থেকে ২৫ দিন। কাজ না থাকলে খুব বিপদে পড়া লাগে। তখন খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। এবার ঈদে পরিবারের কাউকে কিছু কিনে দেওয়া হয়নি। ছেলেমেয়েরা মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ইট বহনকারী শ্রমিক শফিকুল ইসলাম বলেন, সাত বছর থেকে এলাকায় শ্রমিকের কাজ করছি। কখনো বালু বহন করা, ইট ভাঙা, লোহার কাজসহ নির্মাণকাজে সব ধরনের সহযোগিতা করি। কাজগুলো অনেক কষ্টকর। আমরা যে শ্রম দিই সে হিসাবে মূল্য পাই না। বর্তমানে তরিতরকারিসহ সবকিছুরই দাম বেশি। ইচ্ছা থাকলেও মাছ, মাংস কিনতে পারি না। বাচ্চারা প্রতিদিন খালি তরকারি খেতে চায় না । তাদের খাওয়াইতেও পারি না, কিছু বলতেও পারি না।
রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন নূর নবি। বালু ও সিমেন্টের মিশ্রণের কাজ করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্মাণশ্রমিকরা আছি জন্যেই শহরে এত বড় বড় দালান তৈরি হয়। এটাই আমাদের ভাগ্য। আমরা হাড়ভাঙা শ্রম দিয়ে দালানকোঠা বানাই আর মানুষ সেখানে থাকে। কিন্তু আমাদের পরিবাই চলে না। পাঁচ বছর আগে টাকা কম পাইতাম, আর সবকিছুর দামও কম ছিল। তখনও সংসারে নাই নাই করা লাগত। এখন মজুরি কিছুটা বেড়েছে, সঙ্গে সবকিছুর দামও দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেড়েছে। ফলে এখনও সংসারে নাই নাই করা লাগে। আমাদের মজুরি বাড়ানো দরকার, তবেই সমাজে খেয়েপরে থাকা যাবে।’
হেড রাজমিস্ত্রি আলমগীর হোসেন বলেন, বর্তমানে কোনো শ্রমিকের অবস্থা ভালো নেই। রংপুর শহরে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। যাতায়াত ও দুপুরের খাওয়ার পর যা থাকে তা দিয়ে বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে শ্রমিকদের পরিবারগুলোতে নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর পহেলা মে এলে সারা দেশে সভা, সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা শ্রমিকদের অধিকার, মজুরি ও বৈষম্য নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু এরপর সবাই তা ভুলে যায়। শ্রমিকদের অধিকার আর বাস্তবায়ন হয় না।

বাংলাদেশ সময়: ২০:০১:৫৮   ১০২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


অচিরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর বসবে বরিশালে - পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঐক্য ও শক্তির প্রতীক : ধর্মমন্ত্রী
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
সাতক্ষীরায় ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শ্রমিক নিহত
প্রথমবারের মত বিশ্ব ব্যাংক ভূমি সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামপুর-১ আমিনিয়া জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন যুবনেতা বাবু
ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনায় সেই যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের সকল মানুষ এক ছাতার নিচে বাস করবে - পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
জয়পুরহাটে আন্তর্জাতিক কারাতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের মাঝে সনদ বিতরণ
টেক্সাসে ঝড়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ জনে

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ