দুনিয়ার সঞ্চিত সম্পদের কী হবে আখেরাতে?

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » দুনিয়ার সঞ্চিত সম্পদের কী হবে আখেরাতে?
শনিবার, ৩ আগস্ট ২০২৪



দুনিয়ার সঞ্চিত সম্পদের কী হবে আখেরাতে?

টাকা পয়সা ও অর্থ সম্পদের প্রতি ভালোবাসা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। মানুষ মাত্রই সম্পদ, সন্তান ও প্রাচুর্যের মোহে আচ্ছন্ন। এ কথা সত্য ও চিরন্তন। এটি প্রাচীনকাল থেকে প্রমাণিত।

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে, ‘সুশোভিত করা হয়েছে মানবজাতির জন্য নারী, সন্তান-সন্ততি, সঞ্চিত স্বর্ণ ও রৌপ্যভাণ্ডার, প্রশিক্ষিত ঘোড়া, পালিত পশু এবং শস্যক্ষেতের প্রতি ভালোবাসা ও আকর্ষণকে। এটা পার্থিব জীবনের সম্পদ এবং আল্লাহর কাছে রয়েছে শ্রেষ্ঠতম অবস্থান। (আলে ইমরান : ১৪)

এক সময় মানুষের ঘরে খাবার ছিল না। অভাব ছিল। দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা, বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদি কারণে মানুষকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। না খেয়ে, না পরে জীবন ধারণ করতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। বর্তমানে এমন অবস্থা সচরাচর খুব কমই চোখে পড়ে যে, মানুষ না খেয়ে; না পরে অনাহারে দিন পার করছে।

বরং স্বাভাবিক খাওয়া–পরা ও দরকারি নিত্যপণ্যও মানুষের হাতের নাগালে। কাজেই খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রভৃতি মৌলিক চাহিদা পূরণ করার পরিবর্তে অর্থ কড়ি সম্পদ সঞ্চয় করা কখনো ভালো কাজ হতে পারে না। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ যে, কষ্টে জীবন যাপন করে টাকা পয়সা জমিয়ে রাখা হবে।

এ জাতীয় কৃপণতা কখনও কারও জন্য কাম্য নয়! বরং প্রয়োজনে সাধ্যমতো খরচ করাই জরুরি। এটাই ইসলামের শিক্ষা। এজন্য হাদিসে নিজের পরিবারের জন্য খরচ করাকেও সাদকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

আর তারা যেন কিছুতেই মনে না করে যে, আল্লাহ তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন, তাতে কৃপণতা করলে, তাতে তাদের মঙ্গল আছে। বরং এ (কৃপণতা) তাদের জন্য অমঙ্গল। তারা যে ধন-সম্পদের জন্য কৃপণতা করে। কিয়ামতের দিন তাই তাদের গলার বেড়ি হবে। (আলে ইমরান : ১৮০)

আয়াতের তাফসিরে এমন কৃপণের কথা বলা হয়েছে, যে আল্লাহর দেওয়া সম্পদ তার রাস্তায় ব্যয় করে না। এমনকি সেই মালের ওয়াজিব জাকাতও আদায় করে না। সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে, ‘যাকে আল্লাহ তায়ালা ধন-সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে ব্যক্তি তার সেই ধন-সম্পদের জাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন (আজাবের জন্য) তার সমস্ত সম্পদকে মাথায় টাক পড়া (অত্যন্ত বিষাক্ত) সাপের আকৃতি দান করা হবে। যার চোখের উপর দুটি কালো দাগ থাকবে। সেই সাপকে বেড়ির মতো তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। অতঃপর সে তাকে দংশন করে বলবে, ‘আমি তোমার মাল, আমি তোমার সেই সঞ্চিত ধন-সম্পদ।’ (সহি বুখারি)

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে আমাদেরকে এ শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যে, আমরা আমাদের মাল সম্পদ প্রয়োজন অনুযায়ী অবশ্যই খরচ করব। শুধু জমা করে রাখব না। অযথা সঞ্চয় করা থেকে বিরত থাকব। এমন যেন না হয় যে, অর্থ সম্পদ সঞ্চয় করে সম্পদের মালিক হলাম। অঢেল প্রাচুর্য জমা করে রাখলাম। কিন্তু তা আমার কোনোই কাজে এলো না।

নিজ প্রয়োজনে খরচ করে দুনিয়াতেও উপকৃত হতে পারলাম না। এমনকি নফল দান-সাদকা ও জাকাত আদায় করার মাধ্যমে পরকালের মুক্তির পথও সুগম হলো না। আবার এমনও হতে পারে। আমার মৃত্যুর পর আমার উত্তরাধিকার স্ত্রী-সন্তানরাও এ সম্পদের সঠিক ব্যবহার করল না। তখন কী হবে আমার উপায়? এই সঞ্চিত অঢেল প্রাচুর্য, ধন সম্পদ কী আমার কোনো কাজে আসবে? তবে এই সঞ্চিত সম্পদের কী হবে?

লেখক: খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৪:৩৫   ৫৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিদ্ধিরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন
না.গঞ্জে আইজিপি ময়নুল ‘পূজা নিয়ে কোন অপতৎপরতা সহ্য করবো না’
রূপগঞ্জে সহযোগীসহ যুবলীগ নেতা সাত্তার গ্রেফতার
আইনের সমঅধিকার নিশ্চিতে কাজ করছি : ফারুক ই আজম
ডোম জনগোষ্ঠীর সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের : নাহিদ ইসলাম
দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও উজ্জ্বল করার দায়িত্ব সকলের- ধর্ম উপদেষ্টা
দুর্গাপূজা অশুভশক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তিতে রূপান্তরিত করবে- পার্বত্য উপদেষ্টা
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৫০ বাংলাদেশি
দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধান
হারিকেন মিল্টন : হাজার বছরে একবার হলো এমন বৃষ্টিপাত

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ