কর ও ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান বিএনপির

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » কর ও ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান বিএনপির
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫



কর ও ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান বিএনপির

সাধারণ জনগণের ওপর কর ও ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আরোপিত কর ও ভ্যাট জনগণের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি করবে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চলমান অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তথা উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই ১০০ টিরও বেশি পণ্যের ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে। এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে, বিশেষ করে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে, চাপ বাড়াবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকারের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় তারা চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির প্রথম ধাপের ৪২ হাজার কোটি টাকা এবং পরবর্তী সম্ভাব্য ঘাটতি মেটাতে ও ট্যাক্স-জিডিপি শর্ত পূরণ করে আইএমএফের ঋণের জন্য এই ভ্যাট বাড়িয়েছে। কারণ বর্তমান রাজস্ব দিয়ে সরকার বাজেটের খরচ মেটাতে পারছে না। একইভাবে কিছুদিন আগে সরকার ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়েছে কয়েকটি লুণ্ঠিত ব্যাংকের তারল্য সংকট মোকাবিলায়।

সাধারণ জনগণের ওপর কর এবং ভ্যাট আরোপ না করে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও দুর্নীতিগ্রস্ত মেগা প্রজেক্টের বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থ আপাতত বন্ধ রেখে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। পতিত সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বর্তমান বাজেটে বরাদ্দ রেখেছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নিজেদের স্বার্থে বছরের পর বছর বাড়ানো হয়েছে এগুলোর মেয়াদ। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বছরের পর বছর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে চলেছে হরিলুট। গত ১৪ বছরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে এমন লুটপাট হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার ওপর।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শ্বেতপত্র কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে যে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় উন্নয়ন বাজেটের ৪০ শতাংশই লুটপাট করা হয়েছে। বাজেটের এমন অনেক খাত রয়েছে, যেমন অবকাঠামো খাতগুলোতে বরাদ্দকৃত বাজেটের অধিকাংশ অর্থই ব্যয় করা সম্ভব হয় না। এসব খাতে তাদের বরাদ্দকৃত অর্থ হ্রাস করে বাজেটের আকারকে আরও যৌক্তিকভাবে ছোট করে আনা সম্ভব।

খরচ কমানোর পাশাপাশি সরকার এমন কিছু উৎস ও উপায় খুঁজে বের করতে পারে যা জনগণের, বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর অর্থনৈতিক চাপ ফেলবে না।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্লাবে ইনকাম ট্যাক্সের হার বৃদ্ধি এবং সারচার্জ তথা ওয়েলথ ট্যাক্স বাড়ানোর মাধ্যমে কর আদায়ের ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হওয়া যেতে পারে। নন-ট্যাক্স এবং নন-রেভিনিউ খাতে আয় বৃদ্ধি করার দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। ভ্যাটের হার না বাড়িয়ে বরং ভ্যাটের আওতা বাড়ানো যেতে পারে।

সরকার টিন নম্বরধারীদের রিটার্ন সাবমিট এবং কর আদায় নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি ইনকাম ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে এবং কর সংগ্রহের দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে। করযোগ্য আয়কে করের আওতায় নিয়ে আসা সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। এর মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ করা এবং রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব হবে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সম্পদ, যা জব্দ করা হয়েছে বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তা আইনানুগ পন্থায় সেই অর্থ ব্যবহার করা সরকারের জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। এছাড়া যেসব সরকারি সেক্টরে অব্যবহৃত ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে তা চিহ্নিত করে এসব অলস অর্থের যথাযথ আইনানুগ ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে।

কালো টাকা উদ্ধার, ব্যাংকের লুণ্ঠিত টাকা এবং নন-পারফরম্যান্স লোনের টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের শ্বেতপত্র অনুযায়ী, দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা) উদ্ধার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা এখন অতীব জরুরি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির কারণে সবার আশা যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাহায্যে এগিয়ে আসবে। এই প্রেক্ষাপটে আইএমএফ থেকে ঋণ পেতে তাদের প্রদত্ত কঠিন শর্তগুলো শিথিল করার জন্য বলা যেতে পারে। বলা হচ্ছে, আইএমএফের শর্ত পূরণে নাকি কর চাপানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৫:২৯   ৮৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়াঙ্গণের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চান মাসুদুজ্জামান
নিরাপদ সড়ক গড়তে ডাটাবেজ তৈরি করছে প্রশাসন
জামালপুরে নারীলোভী প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে জুতা-ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে নজর দিচ্ছেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী
ওয়াকফ সম্পত্তি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমে সরকার কাজ করছে - ধর্ম উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সাক্ষাৎ
বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গণমাধ্যম কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
জামালপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটি: সভাপতি শামীম ও সম্পাদক মামুন
চীনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের নির্মাণাধীন জাহাজ পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ