
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেছেন, ‘দেশের মধ্যে অনেকেই শঙ্কিত বিএনপি ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের মতো হয়ে যাবে কি না? স্বৈরাচার হয়ে ওঠে কি না? এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল, বিএনপি কয়েকবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, কিন্তু কখনো স্বৈরাচার হয়ে ওঠেনি। যারা এসব কথা বলেন, তারাই দেশকে লুটপাটের রাজ্য বানিয়েছিল।’
রবিবার (২৫ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন ‘স্কুল অব লিডারশিপ’ বাংলাদেশ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারের তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে সামাজিক দায়িত্বশীল নেতৃত্ব এবং সুশাসন’ শীর্ষক সেমিনারে দেশের বিভিন্ন দলের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, গবেষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, উন্নয়ন কর্মকর্তা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ‘নেতা হতে গেলে রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা থাকা জরুরি। অনেককে বলতে শোনা যায় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে স্বৈরাচার হয়ে উঠবে। এমন কথায় আমি হতবাক হই।
বিএনপি সরকার হিসেবে দীর্ঘদিন দেশ পরিচালনা করেছে। ভুলত্রুটি ছিল, কিন্তু বিএনপি কখনো স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়নি। বিএনপি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে স্বৈরাচারী হয়ে উঠবে না। জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।
বিএনপি ১৫ বছর দেশ পরিচালনাকালে বিরোধী দল মত দমনে কোনো গায়েবি মামলা দেয়নি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করেনি। বিএনপি স্বৈরাচার হয়ে উঠবে বলে এমন মিথ্যা নেরেটিভ দাঁড় করাবেন না। বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দেওয়া হয়েছে, মহাসচিবের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে ১০৫টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতাকালে হাসিনা বা আওমী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নামে একটি মামলা দিয়েছে, এমন ঘটনা ঘটেনি।’
একই অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাসান হাফিজ বলেন, আগামীতে আমাদের দেশে অনেকগুলো নির্বাচন হবে।
আমাদের সামনে যে নির্বাচন সেখানে আমরা যেনো স্থানীয়ভাবে সব জায়গায়, সকল সামাজিক শক্তি ও পেশাজীবীদের নিয়ে একটা মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়। যেন নির্বাচনে স্বচ্ছতা থাকে, জবাবদিহিতা থাকে। একটা অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সব দলীয় মানুষদের নিয়ে যেনো এটা আমরা করি। যেটা একটা স্থায়ী কমিটির মতো হবে। যারা নির্বাচনে প্রশাসনকে সাহায্য করবে। এছাড়া ভবিষ্যতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ অন্যান্য পরিস্থিতি অ্যাড্রেস করতে পারে। এটা নিয়ে আমরা চিন্তা করতে পারি।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমিত্বের যে কালচার এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পূর্বের ফ্যাসিবাদ সরকারকে বলতে শুনতাম আমি মোবাইল দিয়েছি, আমি ইন্টারনেট দিয়েছি, আমি পদ্মাসেতু করেছি। প্রকৃত লিডাররা আমি বলবে না, বলবে আমার সরকার এসব করেছে। কেনো আমাদের প্রকৃত লিডারশিপ তৈরি হচ্ছে না? এর জন্য দলগুলোর পাশাপাশি পরিবারও দায়ী। আমাদের পরিবার আমাদের রাজনীতির বাইরে রেখে ঘরোয়া টিকটিকি বানাই রাখছে। পরিবার, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিডারশিপ তৈরি করতে হবে। চ্যালেঞ্জ নেয়া শিখতে হবে জীবনের প্রতিটা স্তরে।
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জজ বলেন, পতিত হাসিনাকে নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। আমি এটা করেছি ওটা করেছি সে দিন আর আসবে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে পরম্পরায় বেগম খালেদা জিয়ার সেক্রিফাইসের কারনে জনগণ তাকে আপোষহীন নেত্রী উপাধি দিয়েছে। জুলাই আন্দোলনে তারেক রহমানের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, গণসংহতি পার্টির সভাপতি জুনায়েদ সাকি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নির্বাহী পরিচালক ড. জামিল আহমেদ, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ চ্যাপাটারের প্রতিনিধি ফয়েজ কাওসার, সমন্বয়ক মেজর (অব.) সিদ্দিক, মেজর জেনারেল আশাব উদ্দিন (অব.), কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, ইয়ুথ পার্লামেন্টের সভাপতি অ্যাড. আমিনুল ইসলাম মুনীর প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:০৪:০৪ ১০ বার পঠিত