
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এর আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে যদি কেন্দ্রগুলো নিজ নিজ এলাকায় সঠিকভাবে গবেষণার কাজ পরিচালনা করে। প্রাণিসম্পদের সমস্যা লাঘবে আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী করা হবে।
আজ বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্র গোদাগাড়ীস্থ রাজাবাড়িহাট দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে আয়োজিত ‘বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে গবেষণা পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সমন্বিতভাবে কাজ করলে প্রাণিসম্পদখাতের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি আরো বলেন, যুব উন্নয়নের অন্যতম বিষয় হতে পারে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশিক্ষণ। আর এসব প্রশিক্ষণ তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করেও বড় উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া যায়।
প্রাণিসম্পদ বিষয়ক গবেষণা কাজে নিয়োজিত বিজ্ঞানীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানীদের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা না দিলে আমরা বিদেশ নির্ভর থাকতে বাধ্য হবো। আমরা হয়তো বিদেশি বই পড়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারব কিন্তু বিজ্ঞানীদের দ্বারা উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কিংবা জ্ঞান দিতে পারব না; তা শুধু তারাই দিতে পারবে।
বিএলআরআই-এর বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, গবাদিপশুতে লাম্পি স্কিন ডিজিস (এলএসডি) হওয়ার ফলে চামড়ায় কোনো প্রভাব পড়ে কিনা তা গবেষণা করে দেখতে হবে। তিনি বলেন, কৃষিসহ অন্যান্য খাতে প্রণোদনা দেওয়া হলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে এখনও পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। উপদেষ্টা প্রত্যাশা করেন সংশোধিত বাজেটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রণোদনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, তবে যতদূর জানতে পেরেছি বাজেটে এ খাতে খামারিদের জন্য তিনশ তিন কোটি টাকা ভরতুকি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
এর অগে রাজশাহীর গোদাগাড়ীস্হ বিএলআরআই আঞ্চলিক কেন্দ্রে ‘উন্নত প্রযুক্তিতে স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ ও ভ্যালু এডেড পোল্ট্রি উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ’ শীর্ষক খামারি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, উন্নত প্রযুক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিমের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সকলের উপকার হবে পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আমিষের যোগান দিবে কারণ ডিম সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য। আমরা যদি মুরগি ও ডিমের উৎপাদন বাড়াতে পারি তাহলে দেশের আমিষের ঘাটতি পূরণ হবে। পশুপালন নিরাপদ করার ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করা জরুরি, কারণ খাদ্যের মাধ্যমে মানব শরীরে যদি অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে; তা রোধ করা কঠিন। এসময় প্রশিক্ষণার্থীদের নিরাপদ ফিড উৎপাদন ও সারাদেশে ছোট ছোট খামারি গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় খামারিরা প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী এবং বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক মো: সাইফুদ্দিন। বিএলআরআই-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তাবৃন্দ, খামারি প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০০:২৪ ১১ বার পঠিত