মাদারীপুরে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় ইজিবাইক চালকের মৃত্যুদণ্ড

প্রথম পাতা » আইন আদালত » মাদারীপুরে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় ইজিবাইক চালকের মৃত্যুদণ্ড
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫



মাদারীপুরে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যায় ইজিবাইক চালকের মৃত্যুদণ্ড

মাদারীপুরে আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী সানজিদা আক্তার দীপ্তিকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ইজিবাইক চালক সাজ্জাদ হোসেন খানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশও দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সাজ্জাদ হোসেন খান (৫৫) সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলাম খানের ছেলে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের বাবা মজিবর ফকির দীপ্তির মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় ১৫ জুলাই অজ্ঞাতদের আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা।

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার করা হয় ইজিবাইকচালক সাজ্জাদকে। আদালতে তোলা হলে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন সাজ্জাদ।

এ সময় গ্রেফতার আসামি জানান, ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির মধ্যে শহরের ইটেরপুল থেকে চরমুগরিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে সাজ্জাদের ইজিবাইকে ওঠে ওই মাদ্রাসাছাত্রী। অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় ব্যক্তিগত কাজ আছে জানিয়ে মাদ্রাসাছাত্রীকে সাজ্জাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মেয়েটিকে ঘরের ভেতর আটকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে ইজিবাইক চালক। বিষয়টি কেউ না জানতে পারে সেজন্য দীপ্তির মরদেহে ইটবেঁধে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে রাখে সাজ্জাদ।

পরে ঘটনার দুদিন পর মরদেহটি পুকুরের পানিতে ভেসে উঠলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর সাজ্জাদকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম।

এই ঘটনায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। আইনি প্রক্রিয়া ও যুক্তিতর্ক শেষে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

মামলার বাদী ও নিহতের বাবা হাজী মো. মজিবর ফকির বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেছে সাজ্জাদ। আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমি চাই দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক।

রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবির জানান, সাজ্জাদ তার কমের্র সাজা পেয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য দিয়ে ঘটনা প্রমাণ করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে অন্য অপরাধীরাও এমন ঘটনা আর ঘটাতে সাহস পাবে না। দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করে ২০১১ সালে মুক্তিপান ইজিবাইক চালক সাজ্জাদ হোসেন খান। এরপর আবারো ২০১৯ সালের ১১ জুলাই মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণ শেষে হত্যা করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪২:৩৭   ৮২৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আইন আদালত’র আরও খবর


ই-পারিবারিক আদালত বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমাবে : সচিব লিয়াকত আলী
প্লট দুর্নীতির ৩ মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড
সুপ্রশিক্ষিত আইনজীবী কার্যকর বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ : প্রধান বিচারপতি
দেশের সব সংস্কার আইনের মাধ্যমেই হয়েছে : আইন উপদেষ্টা
হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ঢাবি শিক্ষক কার্জনও
সংবিধানই বিচার বিভাগের বৈধতার বাতিঘর : প্রধান বিচারপতি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ঐতিহাসিক রায়
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর
‘নির্ধারিত সময়ে আপিল না করলে হাসিনা গ্রেফতার হলেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর’
রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করলেন আইন উপদেষ্টা

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ