
জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল গ্রামে জরাজীর্ণ একটি ঘরে জীবনের শেষ প্রহর কাটাচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব সাহেরা বেওয়া। প্রায় দুই দশক আগে স্বামী হারানো এই বৃদ্ধার কপালে জোটেনি কোনো সরকারি সাহায্য—বয়স্ক বা বিধবা ভাতার সুবিধা কোনোটাই পাননি তিনি। চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিয়ে দিন কাটলেও তাঁর এই দুর্বিষহ জীবন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা বিত্তবান কারোরই চোখে পড়েনি।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ডোয়াইল ইউনিয়নের ডোয়াইল গ্রামে সাহেরা বেওয়ার ঘরটির করুণ দশা সাংবাদিকদের নজরে আসে।
স্বামীহারা সাহেরা বেওয়ার একমাত্র আশ্রয় তাঁর স্বামীর হাতে গড়া সেই জরাজীর্ণ ঘরটি। ঘরটির অবস্থা এতটাই নাজুক যে বর্ষায় চাল চুঁইয়ে পানি পড়ে, ঝড়ে উড়ে যায় চাল। সামান্য বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তাঁকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘরের বেহাল দশার কারণে রোদ-বৃষ্টি সবই সরাসরি তাঁর বিছানায় এসে মেশে। দিনের আলো আর রাতের জোছনা তিনি সরাসরি শুয়েই দেখতে পান, তবে এই ‘কাব্যিক’ বর্ণনা আসলে তাঁর চরম দুর্দশার প্রতিচ্ছবি।
সাহেরা বেওয়ার দুই ছেলে থাকলেও নিজেদের অভাবী সংসারের ভারে তারা মায়ের দেখভাল করতে অপারগ। ফলে, জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসেও তিনি সম্পূর্ণ একা এবং সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত। বার্ধক্য সত্ত্বেও তাঁর নেই কোনো বয়স্ক ভাতার কার্ড এবং স্বামীহারা হওয়া সত্ত্বেও পাননি বিধবা ভাতার সুবিধা। সরকারি সাহায্য বলতে কী বোঝায়, সে সম্পর্কেও তাঁর কোনো ধারণা নেই।
জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসে অসহায় এই বৃদ্ধা সমাজের বিত্তবান ও সরকারের কাছে একটি নিরাপদ বাসস্থানের জন্য আকুতি জানিয়েছেন। মাথা গোঁজার মতো সামান্য একটি নিরাপদ আশ্রয় পেলে হয়তো তাঁর জীবনের বাকি দিনগুলো কিছুটা স্বস্তি ও শান্তিতে কাটবে। এলাকাবাসী প্রত্যাশা করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সমাজসেবীরা এই অসহায় বৃদ্ধার দিকে মানবিক দৃষ্টি দেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৭:২৭ ৭০ বার পঠিত