ভাষাসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অবসরপ্রাপ্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাল আবেদীন খান ইন্তেকাল করেছেন।
রোববার সকালে সাভারের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
আজীবন সংগ্রামী জয়নাল আবেদীন খান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফা, ৬৮’র ১১ দফা, ৬৯’র গণ আন্দোলন, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জেল খেটেছেন বহুবার।
জয়নাল আবেদীন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সাভারের সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতের আগরতলায় পাড়ি জমান। প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের মোটিভেশন ক্যাম্প স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তায় পাহাড়ের গভীরে কল্যাণপুর নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প (সুইমিং) প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি এর ‘ইনচার্জ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দেশ স্বাধীন হলে নতুন স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং এক জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের নির্দেশে সার্কেল অফিসার হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ১৯৯২ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।
স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন সাভারে। অনেকটা চুপিসারে মানুষের মঙ্গল কামনায় কাটছিল তার দিন। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ২০০৬ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) অনুপ্রেরণায় সাভারে গঠিত হয় দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সাভার। তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে সারা দেশের সনাকের ভোটে তিনি টিআইবি’র ট্রাস্টিবোর্ডের উপদেষ্টা পরিষদে সনাক প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর শেষদিন পর্যন্ত তিনি সনাক সাভারের সদস্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০:২১:১৭ ৪০০ বার পঠিত