নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মারীখালী নদী ও কৃষিজমি ভরাটের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী ৮টি গ্রামবাসী। এতে অংশ নেন গ্রামের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সোনারগাঁও প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ নেতা রুবাইয়াত হোসেন শান্ত, সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ মোল্লা বাদশা, সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাসুদ রানা মানিক, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফারুক হোসেন, মানবাধিকার কর্মী জাহানারা বেগম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আব্দুস সালাম বাবুল, সোনারগাঁ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উর্মি আক্তার ও সোনারগাঁ নদী রক্ষা কমিটির সদস্য ফরিদ হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৈদ্যেরবাজার মাছঘাট এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে কয়েকটি ড্রেজারের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী মারীখালি নদের মুখ দখল করে ‘হেরিটেজ পলিমার এন্ড সেমি টিউবস লিমিটেড’ নামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফের মাধ্যমে বালু ভরাট করে নৌপথ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার মানুষের জীবিকা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ নদী দিয়ে সুদূর কাইকারটেক হাট, উদ্ধবগঞ্জবাজার ও মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ীদের নদী পথে মালামাল পরিবহন ও যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি ও কৃষিজমি ক্রয় না করেই ওই কোম্পানির লোকজন জোরপূর্বক বালু ভরাট করছে। ওই এলাকার হাজী আজিজুল্লাহর ৭টি দাগে প্রায় ১ একর ১০ শতাংশ জমির মালিকানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক রেজাউল করিমের স্ত্রী সুরাইয়া করিম মুন্নীর সঙ্গে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সুরাইয়া করিম মুন্নী বিরোধকৃত জমি ‘হেরিটেজ পলিমার এন্ড সেমি টিউবস লিমিটেডের’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফা কামাল ওরফে আল মোস্তফার নিকট বিক্রি করে দেন। বর্তমানে ওই বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
মো. মোস্তফা কামাল ওরফে আল মোস্তফা বিরোধকৃত জমিতে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রউফের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি সিন্ডিকেট ওই জমির পাশ্ববর্তী দোকানপাট উচ্ছেদ করে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, অবিলম্বে অবৈধভাবে বালু ভরাট বন্ধ না করলে বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে। অবৈধভাবে বালু ভরাট বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগীরা সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শহিনুর ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০১:৪৫ ৫০০ বার পঠিত