
বগুড়ায় শীতকালীন সবজির বাজারে ধস নেমেছে। প্রতিদিনই সবজির দাম কমতে থাকায় কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠছে না। গতকাল ফুলকপি বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ব এক টাকা ২৫ পয়সা কেজিতে। অর্থাৎ প্রতিমণ ৫০ টাকায়। আর বাঁধাকপি প্রতিপিস মাত্র ২ টাকা। কৃষকরা ন্যায্যমূল্য না পেলেও কয়েক হাতবদলের পর এই সবজি সাধারণ মানুষকে কিনতে হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি দামে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় বগুড়ার সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজির বাজার মহাস্থান হাট ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
মহাস্থান হাটের সবজি বিক্রি করতে আসা মোকামতলা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন অভিরামপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম, চকরামচন্দ্রপুর গ্রামের আবদুল খালেক জানান, ফুলকপি ১ টাকা ২৫ পয়সা কেজি, বাঁধাকপি ২টাকা পিস দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে সবজি বিক্রি করে হাটে আনতে ভ্যান ভাড়াসহ জমি থেকে ফসল উঠানোর খরচ উঠছে না।
মহাস্থান হাটের পাইকারি সবজি ক্রেতা মজনু মিয়া জানান, গত কয়েক দিন ধরে হাটে ফুলকপি ও বাঁধা কপির দাম পড়ে গেছে। গতকাল ফুলকপি ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে।
বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ২ টাকা পিস। কারণ হিসেবে তিনি জানান, আমদানি বেশি এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সব এলাকায় কপির ফলন ভালো হয়েছে। এক সঙ্গে তা বাজারে ওঠায় দাম পড়ে গেছে।
লাহিড়ীপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুস ছাত্তার কপির দাম পড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, বাজারে প্রচুর নতুন আলু উঠেছে। মানুষ সবজি হিসেবে সেই সব আলু কিনছে। এ কারণে কপির দাম নেই।
শিবগঞ্জের অনন্তবালা গ্রামের কৃষক আমজাদ বলেন, বাঁধাকপির দাম কম দেখে গরুকে খাওয়ানোর জন্য ২ টাকা করে ৫০ পিস কপি কিনেছি।
মহাস্থান সবজি হাটের ফড়িয়া শাহিনুর ও আমিরুল জানান, তারা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে সবজি কিনলেও অতিরিক্ত খাজনা, পরিবহন খাতে অধিক ব্যয় ছাড়াও তাদের লভ্যাংশ রাখার কারণে খুচরা বাজারে দুই থেকে তিন গুণ দামে সবজি বিক্রি করতে হয়।
তারা জানান, মহাস্থান হাট থেকে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক সবজি পাঠানো হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
মহাস্থান হাটের সবজির আড়ত মেসার্স সততা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী আবদুুল বারী বলেন, ভরা মৌসুমের কারণে প্রতিদিনই দাম কমছে। দ্রুত পচনশীল কাঁচামাল হওয়ায় কৃষকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই সস্তায় সবজি বিক্রি করছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, গত মৌসুমে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৮০ হাজার টন সবজি উৎপাদন হয়। এবার সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ৩ লাখ টনের বেশি সবজি ফলনের আশা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৬:৫৭ ২৪০ বার পঠিত