নীলফামারীর ডোমার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ভোগডাবুরী ইউনিয়নে কাঁঠালতলীতে চাষ হচ্ছে উন্নত জাতের মাল্টা। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার মাল্টা ঢাকা চাহিদা রয়েছে। জানা গেছে ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ প্রায় ২০ বিঘা জমির উপর ১০ বছর আগে পঞ্চনীল নামে একটি নার্সারি শুরু করেন।
প্রথমে আম ও লিচু দিয়ে বাগান শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন ফল, ফুল ও ঔষধি গাছের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার নার্সারিতে রয়েছে ১০ জাতের আম, ৫ জাতের লিচু, আপেল কুল, বাউকুল, পেঁপে, লেবু,কামরাঙ্গা, মিষ্টি তেঁতুল, কদবেল, মিষ্টি বেল সহ বিভিন্ন ফলের গাছ। ঔষধি গাছের মধ্যে রয়েছে হরতকি, বহেড়া, ঘৃতকুমারী, শতমুলী, হাজারভানি, গুনিয়ারী, ড্রসেরা ও তুলশি গাছ।
জবা, নীল ও কালো গোলাপ সহ রয়েছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। এছাড়া এ্যাবোকাডো, গুয়েবানো, ড্রাগন, রামভুট্টান, আঞ্জুর সহ বেশ কয়েকটি বিদেশি ফলের গাছও রয়েছে তার নার্সারীতে। আবদুল্লাহ এসব ফল ও ফুলের চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর শুরু করেন মাল্টার চাষ। ১০/১২ বছর আগে ২৫টি মাল্টার চারা রোপন করেন নার্সারীতে।
চারা রোপনের তিন থেকে চার বছরের মধ্যে গাছে ফল ধরে। এখন মৌসুমে একটা মাল্টা গাছে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে মাল্টা ধরছে। অন্যান্য মাল্টার চেয়ে এই বাগানের মাল্টা খেতে সুস্বাদু এবং বাজারে চাহিদা রযেছে। কৃষক আবদুল্লার মাল্টার চাষে সাফল্য দেখে এখন অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ্ বলেন, তার বাগানের মাল্টাগুলো বেশির ভাগই নাগপুরী, দার্জিলিং ও পাকিস্তানের। এই মাল্টার কোয়ালিটি খুবই ভালো। তাই মানুষ এখানে এসে মাল্টার চারা নিয়ে যায়। মাল্টা চাষ লাভজনক ও মাল্টা গাছের চারার চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য গত বছর বিদেশী উন্নতজাতের নাগপুরী, দার্জিলিং, মরক্কো, ভারত, পাকিস্তানী এবং বারী-১ জাতের আরো ১৫০শত মাল্টার চারা রোপন করে। এগুলোতে আগামী তিন বছরে ফল ধরা শুরু করবে।
তিনি জানান এখানকার মাল্টার চাহিদা রয়েছে। ফল বিক্রেতারা এসে বাগান থেকে মাল্টা নিয়ে যায়। মাল্টা তো মৌসুমে একবার আসে কিন্তু চারা বিক্রি হয় সারা বছর। চারা লাগানোর চার বছরের মধ্যে ফল আসায় এটা একটি লাভজনক ব্যবসা। আবদুল্লাহ বলেন তার বাগানে কোন কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না।
নিজস্ব উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে জৈব সার তৈরী করে গাছে দেয়া হয়। এখানকার মাটিতে উপরে বালু এবং নিচে পাথর রয়েছে, তাই এখানকার মাটি মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী। তাই তিনি ভবিষৎতে ১০/১৫ একর চা বাগান লাগাবেন বরে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আগামীতে মাল্টার পাশাপাশি মুছাম্মি ফলও বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে আবদুল্লার। মুছাম্মি মাল্টার চেয়েও খেতে সুস্বাদু এবং মিষ্টি। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছে বলে তিনি জানান।
ডোমার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাফর ইকবাল বলেন, ডোমারে আব্দুল্লাহর মাল্টা বাগানে মাল্টা ধরেছে। আমরা সরকারিভাবেও তাকে সহযোগিতা করছি এবং উৎসাহ দিচ্ছি। ডোমারে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৭:০৯ ৫৫০ বার পঠিত