গ্রামের সবুজ পরিবেশ থেকে উঠে আসা সহজ সরল এক তরুণের হঠাৎ আগমন পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে তোলপাড় করে তুলেছিল। হুম, সেই তরুণ মোস্তাফিজ হয়ে উঠেছিলেন ক্রিকেট বিশ্বের বড় বড় ব্যাটসম্যানদের কাছে আতঙ্ক। ২০১৫ সালে অভিষেক হওয়া এই তরুণের বাহিরটা ছিল যতটা সহজ সরল, বোলিং অ্যাকশন ছিলো ততোটাই তেজে ভরা।
২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজে ১৩টি উইকেট সংগ্রহ করে প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি মোস্তাফিজ। তারপর প্রতিটি সিরিজেই তরুণ মোস্তাফিজই হয়ে উঠেন সবার মধ্যমণি। তার আলো ছড়ানো বোলিং পারফরম্যান্স এর নিকট একে একে পরাস্থ হয় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চমক লাগানোর পর মোস্তাফিজুর রহমান অংশ নেন বিশ্বের বড় বড় ঘরোয়া টুর্নামেন্টে। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অংশ নিয়ে সেখানে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। এরপর তিনি কাউন্টি খেলতে যান ইংল্যান্ডে। কিন্তু একের পর এক সাফল্যের পথে তখন বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইনজুরি। এরপরই হারাতে থাকে ‘কাটার মাস্টার’ এর বোলিং ধার। ভক্তদের কাছেও শুনতে হয় নানা রকম কটূক্তি।
তার পুরো ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করলে ২০১৫ হবে তেজময় প্রথম পর্যায়। ইনজুরিতে পড়ার পর নীরব হয়ে যাওয়া সময়টা হবে দ্বিতীয় পর্যায়। আর চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজে তার নতুন আগমন হবে তৃতীয় পর্যায়।
২০১৫ এর নভেম্বরের পর টানা ১৩ মাস ওয়ানডে ম্যাচ খেলেননি মোস্তাফিজ। দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ওয়ানডেতে ফিরেন তিনি। ২০১৬ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স টফি পর্যন্ত তার ছন্দহীন পুরো ক্যারিয়ারটা হতাশার কালো ছায়ায় ঢেকে যায়।
কিন্তু ঘরের মাঠে চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজে মোস্তাফিজ যেন পুরোনো রুপে ফিরেছেন। চলমান সিরিজে ইতোমধ্যে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে তিনটি ম্যাচ খেলেছে তাতে ৪.২৬ বোলিং ইকোনোমি রেটে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ।
গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক রানের জন্য টানা চার মেডেন ওভার না হলেও প্রথম চার ওভারে বোলিং হিসাবটা ছিল ৪-৩-১-০। এছাড়া পুরো ম্যাচে ৬.৩ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন তিনি। মোস্তাফিজের আগের সেই আগ্রাসী রুপে ফেরাটা দলের জন্য অবশ্যই স্বস্তির।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৭:৩১ ২৯৪ বার পঠিত