ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬, আহত শতাধিক

প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২ ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬, আহত শতাধিক
মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯



---

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ‏ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোর রাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন তুর্ণা নিশিতা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হয়েছে। প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী মারা গেছেন ১৬জন। তবে এ হতাহতের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। হতাহত সবাই উদয়নের ট্রেনের যাত্রী।

রেলওয়ে ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আখাউড়া ও লাকসাম থেকে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ারসার্ভিস, পুলিশ, জেনেটিক কম্পিউটার একাডেমী মুক্ত স্কাউট গ্রুপ, সিডিসি মুক্ত স্কাউট গ্রুপ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুব লীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছে।

রেলওয়ে স্টেশন, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকাগামী তুর্ণা নিশিতা মঙ্গলবার ভোর রাত ২টা ৪৮মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওয়ানা করে। মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার জন্য লালবাতি জালিয়ে সংকেত দেয়। অপরদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ পথে স্টেশন মাস্টার তাকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেয়। ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার সময় ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই অপর দিক থেকে আসা তুর্ণা নিশিতা ট্রেনের চালক সিগনাল (সংকেত) অমান্য করে দ্রুত গতিতে ট্রেন চালায়। এ সময় উদয়ন ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগির সঙ্গে তুর্ণা নিশিতার ইঞ্জিনের সংঘর্ষ হয়। এতে উদয়ন ট্রেনের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। উদয়ন ট্রেনের ১৬জন যাত্রী মারা যায় এবং শতাধিক নারী পুরুষ যাত্রী আহত হয়েছে। নিহতদের পরিচয় জানতে বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘নিশিতা ট্রেনটি আউটারে মেইন লাইনে থামার সংকেত দেয়া হয়েছিল। উদয়ন ট্রেনটিকে মেইন লাইন থেকে ১ নং লাইনে আসার সংকেত দেয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে উদয়ন ট্রেন ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করছিল। এ সময় নিশিতা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন ট্রেনের উপর উঠে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’

কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন মারা গেছে। ২৯জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই-তিনজন ছাড়া বেশির ভাগই গুরুতর আহত। ‘

উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে উদ্ধার কাজ করছি এবং উভয় ট্রেনের যাত্রীদের নাস্তা-পানি দেয়া হচ্ছে ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে ও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে এবং নিহত পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।’

এ ঘটনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রেলওয়ে মহা পরিচালক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৩৭:২৮   ৩১৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

চট্টগ্রাম’র আরও খবর


ফিরলেন লিটন, নতুন মাইলফলক সাকিবের
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়ালো
গুলির উৎস খুঁজতে গিয়ে মিলল অস্ত্রের কারখানা!
ফেনী শর্শদীর ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বহিষ্কৃত
চট্টগ্রামের নির্বাচনেও মাঠে ছিল না বিএনপি - তথ্যমন্ত্রী
সহিংসতা-সংঘর্ষ-ইভিএম ভাঙচুর: ২ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত
অপহরণের ৫ দিন পর মাদরাসাছাত্র উদ্ধার, আটক বাবুর্চি
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর স্ত্রীর ওপর বিএনপির হামলা
মধ্যরাতে বন্যহাতির তাণ্ডব, প্রাণ গেল ২ কিশোরের
বিত্ত কখনো রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না - তথ্যমন্ত্রী

আর্কাইভ