কিশোরীকে বিয়ে করা সেই বৃদ্ধ বর রিকশাচালক সামছুল হককে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লার লালমাই থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার উপজেলার হরিশ্চর একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ওই কিশোরীকেও।
ভিকটিমের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমাম হোসেন ঢাকায় চাকরি করায় গ্রামে বসবাস করা তার পরিবারের দেখাশুনা করতেন পেরুল দীঘিরপাড়ার রিকশাচালক সামছুল হক। ইমাম হোসেনের দ্বিতীয় মেয়ে (১৩) স্থানীয় পেরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সামছুল হক নিজের রিকশায় তাকে নিয়মিত স্কুলে আনা নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে সামছুল হক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই তিনি ওই বাড়িতে রাত্রিযাপন করতেন। স্থানীয়রা বিষয়টি আপত্তি জানালে প্রাপ্তবয়স হলে ওই কিশোরীর সঙ্গে নিজের ছেলে মনিরের বিয়ে দেবেন বলে এলাকায় প্রচার করেন সামছুল। কিন্তু গত ১০ মে সামছুল তার চেয়ে ৫২ বছরের ছোট ওই কিশোরীকে নিয়ে উধাও হয়ে যান।
স্থানীয়দের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে ১১ মে পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান লোক মারফত সামছুল হক ও কিশোরীকে ইউপি কার্যালয়ে হাজির করে বিস্তারিত জানতে চান। ওই সময় সামছুল হক কিশোরীর প্রাথমিক শিক্ষা সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদ ও বিয়ের কাবিননামা উপস্থাপন করেন। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও জন্মনিবন্ধনে তার জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে ০২/০২/২০০২ ইং। কাবিননামায় দেখা যায়, গত ১০ মে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ৭নং ওয়ার্ড এর নিকাহ রেজিস্ট্রার মুজিবুর রহমান সরকারের কার্যালয়ে ৫ লক্ষ টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। এতে সামছুল হকের জন্মতারিখ ০৩/০১/১৯৫৫ইং উল্লেখ রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কিশোরীর মা তাছলিমা বেগম বাদী হয়ে সামছুল হকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২/৩ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লালমাই থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে লালমাই থানার এসআই মোশারফ হোসেন উপজেলার পেরুল উত্তরের হরিশ্চর স্কুল সংলগ্ন হাবিব স্যারের ভাড়া বাসা থেকে সামছুল হককে গ্রেপ্তার করেন। এসময় পুলিশ তার হেফাজত থেকে ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করেন।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, সামছুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার হেফাজত থেকে ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করেছি। শুক্রবার সকালে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হবে। এছাড়া আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫৯:৩৮ ১১৬ বার পঠিত
