
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবলমাত্র হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিই ছিলেন না, তিনি (বঙ্গবন্ধু) ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ ও রাজনীতিবিদ।
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত দু’টি রাষ্ট্র গঠনের বিপরীতে ভাষাভিত্তিক একটি আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনের দূরদর্শী স্বপ্ন দেখেন। ভাষাভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা ইউরোপ, জাপান, কোরিয়া বা চীনের বাইরে ওইসময়ে প্রসারিত হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলে ভাষার ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের ধারণা অকল্পনীয় ছিল বলেই পাকিস্তান ও ভারত এ দু’টি রাষ্ট্রই গঠিত হয় সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। ১৯৪৭ থেকে ’৭১ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জনগণকে সংগঠিত করে এবং তাদেরকে সাথে নিয়ে জনযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বিশ্ব-মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ।
মোস্তাফা জব্বার শুক্রবার রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৫তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ লাইব্রেরী এসোসিয়েশন আয়োজিত বিশেষ ওয়েবিনার ‘চির জাগরূক বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব তথ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর দে।
বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি বেগম আখতার জাহান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো: গোলাম ফারুক, গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুবকর সিদ্দিক, শেরে বাংলা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
তিনি বলেন,‘বঙ্গবন্ধু কোন প্রক্রিয়া পাশ কাটিয়ে আন্দোলন করেননি বরং ’৪৭ থেকে ’৭১ পর্যন্ত জনগণকে সংগঠিত করে, জনগণকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতার লড়াই করেছেন। এই ভূ-খন্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে। জাতির পিতা প্রথমেই একটি জাতিসত্তা গড়ে তুলেছেন এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম দূরদর্শিতার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী বিশ্বের কোন নেতা অর্জন করতে পারেনি।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন,বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁকে হত্যা করা না হলে পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে ঘুরেও দাঁড়াতো।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধুর বোনা-বীজ আজ বিশাল মহিরূহে রূপ নিচ্ছে। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা কর্মসূচীর রূপরেখা। এরই ধারাবাহিকতায় অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও ২০২০ সালে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়ন ও ডিজিটাইজেশনের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
মন্ত্রী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সকল স্তরের শিক্ষাকে ডিজিটাল করারও আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩১:৩৯ ৭৯ বার পঠিত