
মিয়ানমারের রাখাইনে সরকার ও বৌদ্ধদের কাছে নিপীড়ন থেকে প্রাণ রক্ষায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার তিন বছর অতিক্রম হলো ২৫ আগস্ট। সংকটের এ তিন বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং এগুলোর আশপাশ এলাকাসমূহে অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়েছে।
গত তিন বছরে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে ১২ ধরনের অপরাধে ৭৩১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি হয়েছে ১ হাজার ৬৭১ জন রোহিঙ্গা। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা কারাগারে ৫৫২ পুরুষ ও ৪৮ নারী রোহিঙ্গা বন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন জানান, হত্যা, অস্ত্র, মাদক, ধর্ষণ, ফরেনার্স অ্যাক্ট, অপহরণ, বিশেষ ক্ষমতা আইন, পুলিশের ওপর হামলা, ডাকাতি বা ডাকাতির প্রস্তুতি, মানব পাচার ও অন্যান্য অপরাধে রোহিঙ্গা অপরাধীদের বিরুদ্ধে গত তিন বছরে এসব মামলা হয়েছে। অপরাধের মধ্যে ৫৩টি খুন, ৪১০টি মাদক, ২৮টি মানব পাচার, ৫৯টি অস্ত্র, ৩৫টি ধর্ষণ ও ১০টি ডাকাতি এবং ১৬টি অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মামলা উল্লেখযোগ্য। ২০১৭ সালে নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ছিল ৭৬টি আর আসামি হয় ১৫৯ জন। ২০১৮ সালে ২০৮ মামলায় আসামি করা হয়েছে ৪১৪ জনকে। আর ২০১৯ সালে মামলার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬৩ আর আসামি ৬৪৯ জন। চলতি বছরের ২৫ আগস্ট ১৮৪ মামলায় আসামি হয়েছে ৪৪৯ জন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্যাম্পে কয়েকটি গ্রুপ মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা মিয়ানমার থেকে সরাসরি ইয়াবা চালান এনে ক্যাম্পে মজুত রাখে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ির মধ্যেও এসব তত্পরতা চালায় তারা।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন কোনো না কোনো ক্যাম্প থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। তবে ক্যাম্পে অপরাধপ্রবণতা বাড়লেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। গত দুই বছরে ক্যাম্পের ভেতরে রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে অন্তত ৪৫টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরো ৩২ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৬:০৩ ৮২ বার পঠিত