
ঢাকা, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০নিউজটুনারায়ণগঞ্জ:জাতির পিতা সারা জীবন পরিত্যক্ত জায়গায় বৃক্ষরোপন করে গেছেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশ একদিন সবুজের সমারোহে পরিণত হবে। মহান স্বাধীনতার স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকে এক কোটি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২৬ জুলাই ২০২০ থেকে শুরু হওয়া ধারাবাহিক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে আজ (মঙ্গলবার) বৃক্ষের চারা রোপণ করেন মোহাম্মদ এবাদুল করিম এমপি, মোঃ নাসির উদ্দিন এমপি, মোঃ মোতাহার হোসেন এমপি, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া এমপি, মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্ এমপি, কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এমপি, মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, মোঃ আছলাম হোসেন সওদাগর এমপি, মোঃ শাহজাহান মিয়া এমপি, মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন) এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, সাহাদারা মান্নান এমপি, নাহিদ ইজাহার খান এমপি, মোছাঃ খালেদা খানম এমপি এবং কাজী কানিজ সুলতানা এমপি।
প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপনের যে কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানান সংসদ সদস্যবৃন্দ। সবার জন্য বৃক্ষরোপন একটি জরুরী বিষয়, বড় বড় শহরে প্রতিদিন যে হারে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে তা ঠিক রাখতে হলে বৃক্ষরোপনের বিকল্প নেই। যেখানেই পরিত্যক্ত জমি রয়েছে সেখানেই বৃক্ষরোপন করা প্রয়োজন। চাষের জমি বাদ দিয়ে যতটুকু জমি থাকে সেখানে আরো বেশি বৃক্ষরোপন করা উচিৎ। শুধু বৃক্ষরোপণ নয় এগুলোর পরিচর্যাও প্রয়োজন, রক্ষণাবেক্ষনের জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর গাছের পরিচর্যা যেন ঠিক ঠিকভাবে করা হয়, গাছ যেন সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
সংসদ সদস্যবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সবুজায়ন কর্মসূচীর আওতায় মাননীয় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ ভবন চত্বরে বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত নেতা কর্মীরা সারা বাংলাদেশ ব্যাপী পরিবেশ বাঁচাতে, দেশ বাঁচাতে, দেশ রক্ষা করতে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন। গাছই পারে আমাদের পরিবেশেকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে। বনজ বৃক্ষরোপনের ফলে আমরা বন্যা, খরা, ঘুর্ণিঝড় অতি সহজেই মোকাবেলা করতে পারি। বাংলাদেশের মতো দুর্যোগ প্রবণ দেশে বৃক্ষরোপন আরো বেশি জরুরী। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই সামাজিক বনায়নের কাজ শুরু করেছে, ফলে বনভূমির পরিমাণও প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
আরো বলেন, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বনজ ছাড়াও ফলজ ও ঔষধি গাছের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থের উন্নতিতে ফলজ গাছ বড় ভ’মিকা পালন করে। ফলজ গাছের মাঝে আমলকী একটি উপকারী গাছ, করোনার ক্ষেত্রে আমলকী একটি অত্যন্ত উপকারী ফল। এটি যদি সারা বাংলাদেশে লাগানো যায় বৈশ্বিক মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশ অনেক সুফল পাবে। ডায়বেটিকস এবং আরো অন্যান্য রোগের ঔষধ রয়েছে এই আমলকীতে।
বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বকে ঘিরে আমাদের প্রত্যাশা হলো গাছ লাগান জীবন বাঁচান। অক্সিজেন শুধু প্রয়োজন নয়, এটি আমাদের বেঁচে থাকার মাধ্যম। অক্সিজেন বৃদ্ধির জন্য পৃথিবীর প্রথম চাহিদা হলো বৃক্ষরোপন। এককোটি বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বে পরিবেশগত পরিবর্তন আনবো। সারা পৃথিবীর মানুষ সুখী, সমৃদ্ধশালী, সুন্দর জীবনযাপন করতে আমাদের এই গাছ অক্সিজেন ছড়িয়ে দেবে।
বৃক্ষরোপণ অক্সিজেনের সরবরাহ যেমন বাড়াবে তেমনি আমাদের অর্থনীতির চাকাও সচল রাখবে। ষোল কোটি মানুষ একটি করে গাছ লাগালেও দেশে ষোল কোটি গাছ বৃদ্ধি পাবে। একটা বাচ্চা যখন ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে পাঁচটি করে গাছ লাগালে একটা সময় ঐ বাচ্চার আর্থিক অনটন দূর করতে সহায়তা করবে। বাচ্চার বয়স যখন পচিশ বছর হবে তখন গাছের বয়সও হবে পচিশ।
ঐ বাচ্চা যদি গরিবও থাকে তাহলে পাঁচটি গাছ বিক্রি করে তার একটি মূলধন তৈরি করে তা কাজে লাগাতে পারবে। গাছ কাটা কমিয়ে চারা রোপণ বৃদ্ধি করতে হবে। গাছ প্রকৃতি থেকে আসে। গাছ থেকে যে অক্সিজেন আসে তা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের দেশের লোকজন বৃক্ষরোপন সম্পর্কে এখনো সচেতন নয়। কিছু কিছু মানুষ আছে গাছ লাগায় না গাছ কাটে। আমাদের পূর্ব পুরুষ কর্তৃক লাগানো গাছ আমরা কেটে ফেলি।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিক-২০২০ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সারাদেশে এক কোটি বৃক্ষের চারা রোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৪:৩৫ ১৩৭ বার পঠিত