শুভ নববর্ষ - বাংলা নববর্ষ ও সনের ইতিহাস

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » শুভ নববর্ষ - বাংলা নববর্ষ ও সনের ইতিহাস
শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৮



---ঐতিহ্যগত ভাবে সূর্যোদয় থেকে বাংলা দিন গণনার রীতি থাকলেও বাংলা একাডেমী এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২.০০টায় দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে।সৌর পঞ্জিকা মতে পহেলা বৈশাখ সূর্যোদয় থেকে শুরু। রাত ১২টা থেকে নয়। বাংলাদেশে নববর্ষ ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা মতে এই দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়। বাংলায় নববর্ষ পশ্চিম বাংলায় পালিত হয় এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখে। আর এই বিভক্তি দিয়েই বাংলা নতুন বছরের শুরু। আমার জানা মতে বিশ্বে কোথাও একই জাতির একই নববর্ষ পালনের এই বৈষম্যতা নেই। এখন সময় এসেছে এই সব বৈষম্য দূর করে বিশ্বের সকল বাঙালি এক হয়ে সব আদন্দ -উৎসব ও পরব-পাবন একসাথে মিলিত ভাবে করার। নইলে বাঙলির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধর্মান্ধ পরাশক্তি শুধু বিভুক্ত নয় চিরতরে মুছে ফেলবে-গ্রাস করবে। তাই আমরা যেন ইংরেজি “new year”-এর মত রাত ১২ টায় নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় না করে সূর্যোদয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাই।বাংলা নববর্ষের ইতিহাস জানি আর পারলে যে বিভক্তি দিয়ে তা দূর করি।

---বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। নববর্ষ-এর উৎসব ত্রিপুরার বাঙালিরদের জীবনের একটা বিশেষ অংশ নিয়ে থাকে। নববর্ষ বাঙালির একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত।

বাংলা নববর্ষের ইতিহাস : বাংলা সনের ইতিহাস ঘটনাবহুল।
অবাঙালি শাসকের আরোপিত শাসন সংস্কৃতি,নানান বাধ্যতামূলক
অনুশাসন,বলপ্রয়োগ,আদেশপ্রাপ্ত বাংলা সন ও তারিখ বহু ঝড় ঝাপ্টা পথ পেরিয়ে রূপ নিয়েছে এই নববর্ষের । অনেক কাল আগে থেকেই সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা ১২ মাস পালিত হতো। এই সৌর পঞ্জিকা শুরু হতো গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় হতে।সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম,বঙ্গ,মনিপুর নেপাল,উড়িষ্যা,পাঞ্জাব তামিল নাড়ু কেরলা এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই উদযাপিত হত। এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।এক সময় এমনটি ছিল না। তখন নববর্ষ “আর্তব উৎসব” তথা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত যা মূলত কৃষি নির্ভরশীল ছিল।

---প্রাচীন বাঙলার রাজা শশাঙ্করের আমল (৫৯০-৬২৫) থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। পশ্চিম ও পূর্ব বাংলা,বিহার,আসাম ও ঊড়িষ্যা নিয়ে ছিল তাঁর রাজ্য বিস্তীর্ন ছিল। তাঁর শাসনামলে জুলিয়ান পঞ্জিকা অনুসারে বাঙলা বর্ষ গণনা শুরু হয়। সূর্য -এর ভিত্তি করেই “সোলার ক্যালেন্ডারের উৎপত্তি।বাঙলা সনের প্রবর্তন যিনি করেন তিনি কোন বাংলা ভাষী না বাঙালি নন। তিনি ছিলেন চেঙ্গিস খান ও মহাবীর তৈমুর লঙের সুযোগ্য বংশধর বিশ্ববিখ্যাত মোঘল সম্রাট আকবর। সেই দিল্লীর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত তিনি এই দেশে বাংলা সন প্রবর্তন
করেন।”সন’ ও ‘তারিখ’ দুটিই আরবী শব্দ। সন অর্থ হল ‘বর্ষ’ অথবা
---‘বর্ষপঞ্জী’ও তারিখ অর্থ দিন হিন্দি ও উর্দুতে ‘তারিখ’ শব্দের অর্থ আবার ইতিহাসও। ‘সাল’ হচ্ছে ফারসী শব্দ যার অর্থ হল বৎসর। বাংলা সনের সূত্রপাত হয় আরবী হিজরী সনের ওপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ ইসলামী সনের ওপর ভিত্তিতে একজন অবাঙালী মুসলমান বাদশাহ কর্তৃক বাংলা সনের প্রবর্তন। যারা ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞ তারাই মনে করি বাংলা সন হিন্দু বা অমুসলিমদের দ্বারা প্রবর্তিত একটি বর্ষ
পঞ্জী।

---ইংরেজি’ তথা ‘গ্রেগরীয়ান’ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মক্কা থেকে মদীনায় ঐতিহাসিক হিজরত অবলম্বন করে প্রবর্তিত, এই হিজরী সন শুরু হয় ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ১৬৫ জুলাই তারিখ থেকে। বাংলা সনের মূলে হিজরী সন বিদ্যমান বিধায় হিজরী সালকেই সুকৌশলে বাংলা সনে রূপান্তরিত করা হয়।মোঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে তারই নির্দেশে ৯৯৮ হিজরী মোতাবেক ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের প্রবর্তন হয়। বাদশাহ আকবর ৯৬৩ হিজরীতে অথাৎ ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে (১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে) দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। এই ঐতিহাসিক ঘটনা চিরন্তরণীয় করে রাখার জন্য ৯৬৩ হিজরী অবলম্বন করেই বাংলা সন চালু করা হয়। অর্থাৎ ১, ২, ৩-এভাবে হিসেব না করে মূল হিজরী সনের চলতি বছর থেকেই বাংলা সনের গণনা শুরু হয়। ফলে জন্ম বছরেই বাংলা সন ৯৬৩ বৎসর বয়স নিয়ে যাত্রা শুরু করে। উল্লেখ্য, হিজরী সনের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল।হিজরী সনের ক্ষেত্রে যে রকম হিজরতের দিন ও মাস (১২ রবিউল আউয়াল) সুনির্দিষ্টভাবে অবলম্বন না করে শুধুমাত্র সালটিকেই (৬২২ খ্রিস্টাব্দে) সংরক্ষণ করা হয়, বাংলা সনের ক্ষেত্রেও তেমনি সম্রাট আকবরের রাজ্যভিষেকের দিন ও মাস (১৪ইং ফেব্রুয়ারি) অবলম্বন না করে শুধুমাত্র বৎসরটি (৯৬৩ হিজরী) সংরক্ষিত হয়।হিজরী সনের প্রথমদিন হল পহেলা মহররম। বাংলা সনে তা পরিবর্তন করে পহেলা বৈশাখ করা হয়। ৯৬৩ হিজরীতে মহররম মাস ও বৈশাখ মাস একই সঙ্গে আসে। ফলে, তদানীন্তন শকাব্দের প্রথম মাসটি গ্রহণ না করে হিজরী সনের প্রথম মাস মহররমের অর্থাৎ বৈশাখ মাসকেই বাংলা সনের মাস হিসাবে পরিচিহ্নিত করা হয়।

---বাংলা সনের সৃষ্টি হয় ফসল তোলার সময় লক্ষ্য করে। কৃষিনির্ভর বাংলার রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে সৌর বৎসর অবলম্বনে এই নতুন সন গণনা শুরু হয়। তাই, প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ‘ফসলী সন’ নামে অভিহিত হতো। ‘বাংলা’র জন্য উদ্ভাবিত বলে এটি পরবর্তী পর্যায়ে ‘বাংলা সন’ নামে পরিচিহ্নিত হয়। উল্লেখ্য, একইভাবে ভারতের উড়িষ্যা ও মহারাষ্ট্র প্রদেশে যথাক্রমে ‘বিলায়তী’ ও ‘সুরসান’ নামে আঞ্চলিক সনের সৃষ্টি হয়। এসব সনেরও উৎস-সন হিসেবে হিজরী সনকেই গ্রহণ করা হয়।সম্রাট আকবরের আমলে সুবা-এ-বাংলা (বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা) মোগল শাসনের আওতাভুক্ত হয়। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এক জটিল সমস্যা দেখা দেয়। প্রজাদের দেয় খাজনা ফসলের মাধ্যমে আদায় করতে হলে বছরে একটি সময় নির্দিষ্ট থাকা আবশ্যক। কিন্তু সে কালের রাজকীয় সন অর্থাৎ হিজরী সন চন্দ্র সন হওয়ার প্রতি বছর একই মাসে খাজনা আদায় সম্ভব হতো না। ফলে, সম্রাট আকবর একটি সৌরভিত্তিক সন প্রচলনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। উল্লেখ্য, চান্দ্র বৎসর ৩৬৫ দিনের না হয়ে ৩৫৪ দিনের হয়ে থাকে। ফলে, চান্দ্রভিত্তিক আরবী মাস বৎসরের সৌরভিত্তিক ঋতুর সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোন সামঞ্জস্য বহন করে না। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় যে, বাংলাদেশে পবিত্র রমযান এখন পুরোপুরি না হলেও প্রায় শীতকালে উদযাপিত হয়। কিন্তু ১৫-১৬ বৎসর পূর্বে এটি প্রচণ্ড ও দুর্বিষহ গ্রীষ্মের সময় উদযাপিত হতো।
সম্রাট আকবরের নির্দেশে প্রচলিত হিজরী সনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ-জ্যোতিষী আমীর ফতেহ উল্লাহ সিরাজী বহু ভাবনা-চিন্তার পর সনসমূহের উদ্ভাবন করেন তাদেরই একটি হচ্ছে “ফসলী সন’’ বা ‘বাংলা সন’। পূর্বেই উল্লিখিত হয়েছে যে, ফসলের মওসুমের কথা বিবেচনায় রেখে এই নতুন সনের প্রবর্তন হয় বলে এর নাম ‘ফসলী সন’ হয়। পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন অঞ্চলের নাম অনুযায়ী ‘ফসলী সন’ পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে এবং বাংলাদেশে তা ‘বাংলা সন’ নামে অভিহিত হয়।

মোঘল সম্রাট আকবর (শাসনামল, ১৫৫৬ থেকে ১৬০৫) কর আদায়ের উদ্দেশ্যে নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার প্রচলন করেন। এর আগে মুসলিম শাসনামলে কৃষি ও ভূমিকর আদায় করা হতো ইসলামিক হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসারে। হিজরী পঞ্জিকা সৌর নির্ভর হওয়ায় কৃষিবছর ও অর্থবছর একই সময়ে হতো না। তাই, অসময়ে কর পরিশোধ করতো হতে ব’লে কৃষকদের কষ্টের সীমা ছিলনা। সহজে কর আদায়ের উদ্দেশ্যে সম্রাট আকবর ক্যালেন্ডার সংশোধনের নির্দেশ দিলেন। নির্দেশমত সে সময়ের বিখ্যাত পন্ডিত, রাজ জ্যোতিষি ও সম্রাটের উপদেষ্টা আমীর ফাতেউল্লাহ সিরাজী সৌর-হিন্দু ও চান্দ্র-হিজরী ক্যালেন্ডারের ওপর ভিত্তি করে নতুন ক্যালেন্ডার তৈরি করলেন। নতুন বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রচলন হলো পরবর্তী ফসল কাটার সময় যখন কৃষকেরা অপেক্ষাকৃত অর্থনৈতিকভাবে ভাল অবস্থায় ছিলেন। ফসল কাটার সময়কাল স্মরণে রেখে তৈরি ব’লে শুরুর দিকে এটা ‘হারভেস্ট ক্যালেন্ডার’ বা ‘ফসলী সন’ বলে পরিচিত ছিল। মোঘল আমলে বাংলা ক্যালেন্ডারকে সাম্রাজ্যব্যাপী সরকারী মর্যাদা দেয়া হয়। হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র-সম্মতভাবেই রাখা হয় মাসগুলোর নাম।

---বাংলা সন মূলত : ইসলামী হিজরী সনের উপর নির্ভরশীল হলেও শকাব্দের নিকটও সে কিঞ্চিৎ ঋণী। বাংলা সনে আমরা বর্তমানে দিন ও মাসের যে নামগুলো ব্যবহার করি সেগুলো শকাব্দ থেকেই গৃহীত। সপ্তাহের নামগুলো রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ ইত্যাদি গৃহীত হয়েছে গ্রহপুঞ্জ ও সূর্য থেকে। মাসের নামগুলো, যেমন বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ ইত্যাদি আমরা পেয়েছে নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে।
বর্তমান ভারতের জাতীয় সন হচ্ছে শকাব্দ। রাজা চন্দ্রগুপ্ত ৩১৯ অব্দে গুপ্তাব্দ প্রবর্তন করেন। এই সন পরে ‘বিক্রমাব্দ’ নামে অভিহিত হয়। এই ‘অব্দ প্রথমে শুরু হতো চৈত্র মাস থেকে। পরবর্তী পযায়ে কার্তিক মাসকে বছরের প্রথম মাস হিসেবে পরিচিহ্নিত করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ১৫ সালে ভারতে শক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। শক সনের স্মারক হিসেবে ৭৮ খ্রিস্টাব্দে শাকাব্দ চালু করা হয়। সৌরভিত্তিক শকাব্দের রবিমার্গের দ্বাদশ রাশির প্রথম মেঘ অন্তর্গত পূর্ণচন্দ্রিকাপ্রাপ্ত প্রথম নক্ষত্র বিশাখার নামানুষারে বৎসরের প্রথম মাসের নাম রাখা হয় বৈশাখ। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন যে, নাক্ষত্রিক নিয়মে বাংলা সনের মাসগুলোর নাম নিম্নেবর্ণিত নক্ষত্রসমূহের নাম থেকে উদ্ভত হয়েছে: বঙ্গাব্দের বারো মাসের নামকরণঃ
বঙ্গাব্দের বারো মাসের নামকরণ করা হযেছে নক্ষত্রমন্ডলে চন্দ্রের আবর্তনে বিশেষ তারার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে । বাংলা মাসের এই নামগুলি হচ্ছেঃ
• বৈশাখ - বিশাখা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• জ্যৈষ্ঠ - জ্যেষ্ঠা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• আষাঢ় - উত্তর ও পূর্ব আষাঢ়া নক্ষত্রের নাম
• শ্রাবণ - শ্রবণা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• ভাদ্র -উত্তর ও পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্রের নাম
• আশ্বিন - অশ্বিনী নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• কার্তিক - কৃত্তিকা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• অগ্রহায়ণ(মার্গশীর্ষ) - মৃগশিরা নক্ষত্রের নাম
• পৌষ - পুষ্যা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• মাঘ - মঘা নক্ষত্রের নাম অনুসারে
• ফাল্গুন - উত্তর ও পূর্ব ফাল্গুনী নক্ষত্রের নাম
• চৈত্র - চিত্রা নক্ষত্রের নাম অনুসারে

সম্রাট আকবর কর্তৃক প্রবর্তিত তারিখ-ই-ইলাহী-র মাসের নামগুলি প্রচলিত ছিল পারসি ভাষায়, যথা: ফারওয়াদিন, আর্দি, ভিহিসু, খোরদাদ, তির, আমারদাদ, শাহরিযার, আবান, আযুর, দাই, বহম এবং ইসক্নদার মিজ। বাংলা দিনের নামকরণঃ অন্যান্য ক্যালেন্ডারের মতো বাংলা ক্যালেন্ডারে সাত দিনে এক সপ্তাহ। গ্রহ নক্ষত্রের নামে নামকরণকৃত। যেমন : সোমবার (মুন বা চাঁদ), মঙ্গলবার (মারস্ বা মঙ্গলগ্রহ), বুধবার (মারকিউরি বা বুধগ্রহ) বৃহস্পতিবার ( জুপিটার বা বৃহস্পতিগ্রহ), শুক্রবার (ভেনাস বা শুক্রগ্রহ), শনিবার (সাটার্ন বা শনিগ্রহ) এবং রবিবার (সান বা সূর্য)।

ফসলী সন’ যখন প্রবর্তিত হয়, তখন কিন্তু ১২ মাসের নাম ছিল : কারওয়াদিন, আরদিভিহিসু, খারদাদ, তীর, আমরারদাদ, শাহরিয়ার, মিহির, আবান, আয়ুব, দায়, বাহমান ও ইসকান্দার মিয। পরবর্তী পর্যায়ে সেগুলো বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ইত্যাদিতে রূপান্তরিত হয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে বংলা সনের প্রথম মাস কোনটি ছিল সে বিষয়ে কিঞ্চিৎ মতানৈক্য রয়েছে। অধিকাংশ ঐতিহাসিক অভিমত প্রকাশ করেন যে, অগ্রহায়ণ হলো অগ্রাধিকার বিধায়, অতীতে আমাদের নববর্ষের দিন ছিল পহেলা অগ্রহায়ণ। অর্থাৎ ‘হায়ণ’ বা বৎসরের প্রারম্ভে যায় যে মাস তার প্রথম দিন ছিল আমাদরে নববর্ষের দিন। কিন্তু ৯৬৩ হিজরীতে যখন ‘ফসলী সন’ বা ‘বাংলা সন’ শুরু করা হয়, তখন হিজরী সনের প্রথম মাস মহররম বৈশাখ মাসের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে, এ দেশে ১লা বৈশাখই ‘নওরোজ’ বা ‘নববর্ষ’ হিসেবে পরিচিহ্নিত হয়। উল্লেখ্য, ‘ইংরেজি’ তথা গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও প্রথমে ১লা মার্চ ছিল ‘নিউ ইয়ারস ডে’। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে পহেলা জানুয়ারি সে সম্মানজনক স্থান দখল করে নেয়।

সম্রাট আকবরের সময় মাসের প্রতিটি দিনের জন্য পৃথক পৃথক নাম ছিল। সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে এ জটিল প্রথা পরিহার করে সপ্তাহের সাতটি দিনের জন্য সাতটি নাম নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে ব্যবহৃত ঐ সাতটি নামের সঙ্গে রোমান সাপ্তাহিক নামগুলোর সাদৃশ্য সহজেই পরিলক্ষিত হয়। অনুমিত হয় যে, বাদশাহ শাহজাহানের দরবারে আগত কোন ইউরোপীয় (সম্ভবত পর্তুগীজ) মনীষীর পরামর্শক্রমে মূলত গ্রহপুঞ্জ থেকে উ™ভূত নিম্নবর্ণিত নামগুলোর প্রচলন করা হয় : (১) রবি (সূর্য)- ঝঁহ বা সূর্য থেকে, (২) সোম (চন্দ্র) গড়হধহ অর্থাৎ গড়ড়হ থেকে, (৩) মঙ্গল গধৎং বা মঙ্গল গ্রহ থেকে, (৪) বুধ গবৎপঁৎু বা বুধ গ্রহ থেকে, (৫) বৃহস্পতি ঔঁঢ়রঃবৎ বা বৃহস্পতি গ্রহ থেকে, (৬) শুক্র ঋৎরমম (বা ঠবহঁং ) থেকে এবং (৭) শনিবার ঝধঃঁৎহ বা শনি গ্রহ থেকে।

ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করতে হত। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর । মোগল সময় থেকেই পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু অনুষ্ঠান করা হতো। প্রজারা চৈত্রমাসের শেষ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতেন এবং পহেলা বৈশাখে জমিদারগণ প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতেন এবং কিছু আনন্দ উৎসব করা হতো। এছাড়া বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে ‘হালখাতা’ করতেন। পহেলা বৈশাখ এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটি মূলত: রাষ্ট্রিয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন নিয়ম-কানুনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ছিল।

যে দিন বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম মাস হয়ে এলো সেদিন হতেই বৈশাখের আনন্দটি নবান্নের আনন্দের চেয়েও আরও বড় আলাদা আঙ্গিক পেতে শুরু করে। মহাজন ও ব্যবসায়ীরা বৈশাখেই ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান চালু করেন। হালখাতা হলো যে বছরটি চলে গেল সেই বছরের হিসাবের যোগ বিয়োগ করে পুরনো খাতাটি তুলে রেখে নতুন বছরের প্রথম দিন নতুন খাতায় হিসাব চালু করা। প্রবীণরা বলেন, লাল সালু কাপড়ের মলাটে মোড়ানো নতুন এই হিসাব খাতায় উপরে লেখা হতো ‘এলাহী ভরসা।’ এই এলাহী শব্দটিও সম্রাট আকবরের ‘তারিখ ই এলাহী’ থেকে এসেছে বলে জানা যায়।

---ইতিহাস থেকে জানা আরও জানা যায় যে, আগে বৈশাখের অনুষ্ঠানের চেয়ে চৈত্র সংক্রান্তির আচার ছিল আকর্ষণীয়। এই রেশ ধরেই বৈশাখের পদার্পণ।এখনও চৈত্রের শেষ দিনে গাঁয়ের বধূরা ঘর বাড়ি পরিষ্কার করে ।পানিতে মাটি ছেনে ঘরের ভিতরে ও আঙ্গিনায় লেপে দেয়।উঠান ঝকঝক পরিষ্কার করে রাখে। বাংলা নববর্ষ বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।বাংলার প্রতিটি শহরে নগরে,গ্রামে-গঞ্জে বাংলা নববর্ষ আনন্দ-উল্লাসে উদযাপিত হয়। এদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার চেষ্টা করেছে বৈশাখের ঐতিহ্যকে রুখে দিতে, তারা ইতিহাসকে ধ্বংস করতে চায় তারা “হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি” বলে প্রচার করেছে ।

হাজার বছর আগে রচিত সিদ্ধাচার্য ভুসুক পা এর চর্যাপদ পাঠ করলে বুঝা যায়, বাঙ্গালী জাতি অতি প্রাচীন, প্রাচীন তার রীতি-নীতি-আচার অনুষ্ঠান। ‘মাস হিসেবে বৈশাখে মাসের একটা আলাদা রূপ স্বতন্ত্র আছে। খররৌদ্র, দাবদাহ, ধু-ধু মাজলাভাব,আকাশ কালো কালবৈশাখীর ঝড় । এ সকল অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য আদি কালেও বাঙলিরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতো ও মঙ্গলদীপ জ্বালাত। ব্যবসায়ীরা হালখাতা খুলত ।গ্রামে দেখা যেত এই দিনে বকেয়া আদায় করা হতো। রান্না হতো ১৩/২১ ধরণের শাক মিশিয়ে একটা তরকারী, বিভিন্ন ভর্তা,সজনে ডাল, বিভিন্ন দেশী মাছ আর ডাল সাথে বাজার হতে আনা মিষ্টি/দই। বৈশাখ মাসের খরতাপ ,শূন্য গোলা তাই উপর বকেয়া কর পরিশোধের পর বাংলার কৃষকদের অবস্থা প্রায় নিঃস্ব।তাই পান্তা ভ্যাট ও নদীর ইলিশ মাছ যা ছিল সুলভ পর্যাপ্ত।

চৈত্রসংক্রান্তির দিনে (পহেলা বৈশাখ এর আগের দিন) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তৈলবিহীন নিরামিষ তরকারী রান্না করার রীতিরও প্রচলন ছিল। দ্রাবিড়দের মধ্যে ফসল কেটে নবান্ন উৎসব পালনের কথা পাওয়া যায়। এছাড়া ইবনে বতুতা তার ভ্রমন বিবরণিতে ফসল কাটার উৎসব এর কথা উল্লেখ করেছেন। চর্যাপদের বিভিন্ন পদেও নতুন ফসল কাটার উৎসবের বর্ণনা পাওয়া যায়।

---কৃষি আবিষ্কারে নারীই পথিকৃত, ফলে নারীতান্ত্রিক সমাজের স্মৃতিচিহ্নবাহী ‘আমান’ নামক মেয়েলি উৎসব প্রাচীনকাল থেকেই বছরের শুরুতে প্রচলিত ছিল। সমাজে শত্রুনিধনের আচার পালন করার রীতি ছিল বছরের প্রথম দিনে। গ্রাম-বাংলার মানুষের বিশ্বাস ছিল, এতে সারা বছর শত্রুর আক্রমণ ও অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। বিগত বছরের গ্লানি মুছে ফেলার কামনায় নববর্ষের সঙ্গে উদযাপন করা হতো কিছু আচার-অনুষ্ঠানও। চৈত্রসংক্রান্তি বা পহেলা বৈশাখের দিনে গাজন বা চড়ক অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নতুন বছরের শুভ কামনা। মানুষের ধারনা চড়কের বাণফোঁড়ের কষ্টের মধ্য দিয়ে বিগত বছরের পাপক্ষয় হবে।

বাংলা নববর্ষের উৎসব এখন বাংলা বর্ষপঞ্জির বোশেখ মাসের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয়। বহু আগে নববর্ষ অন্য সময়ে হতো। যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি বলেছেন, ‘প্রাচীনকালে ফাল্গুনী পূর্ণিমা তিথিতে নববর্ষের উৎসব হতো। দোলযাত্রা বা হোলি সেই উৎসবেরই চিহৃ বহন করে।’ মধ্যযুগের কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কবিতায় অগ্রহায়ণ মাস নিয়ে লেখা ছিল এরকম, ‘ধন্য অগ্রহায়ণ মাস, ধন্য অগ্রহায়ণ মাস। বিফল জনম তার, নাই যার চাষ।’ ভারতচন্দ্রের সময়ে বৈশাখে নববর্ষ পালিত হত বলে মনে করা হয় । তার কবিতায়– ‘বৈশাখে এ দেশে বড় সুখের সময়। নানা ফুল গন্ধে মন্দ গন্ধবহ হয়।’ কীভাবে বৈশাখ মাসে নববর্ষ উদযাপন শুরু হলো সে তথ্য আজও পাওয়া যায়নি।

চৈত্র সংক্রান্তি আর ১ লা বৈশাখ যেন এক সাথে গাঁথা এক পদ্য। একটাকে এড়িয়ে আরেকটা নিয়ে লেখা সম্ভব নয়। চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক পূজা, সঙ্গে চলে গাজনের মেলা। এই গাজনের মেলা চৈত্র সংক্রান্তি থেকে শুরু করে আষাঢ়ী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা সাধারণত হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উৎসব। শাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এইদিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পূণ্য বলে মনে করা হয়। চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। এই উপলক্ষে একগ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়, আবার কোন স্থানে দেখা যায়, প্রতিটি সনাতন হিন্দু ঘরের উঠানে শিব-গৌড়ী নেচে নেচে চাল-ডাল-ফল-অর্থ সংগ্রহ করে। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং তার সাথে অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্যদানব প্রভৃতি সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে। চৈত্র সংক্রান্তির মেলাতে সাধারণত শূলফোঁড়া, বানফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছের ঘোরা, আগুনে হাঁটা প্রভৃতি সব ভয়ঙ্কর ও কষ্টসাধ্য দৈহিক কলাকৌশল দেখানো হতো। এখনও কিছুটা গ্রামের মেলায় দেখা যায়। চৈত্র সংক্রান্তির মেলায় বাঁশ, বেত, প্লাস্টিক, মাটি ও ধাতুর তৈরী বিভিন্ন ধরণের তৈজসপত্র ও খেলনা, বিভিন্ন রকমের ফল-ফলাদি ও মিষ্টি ক্রয়-বিক্রয় হয়। বায়াস্কোপ, সার্কাস, পুতুলনাচ, ঘুড়ি ওড়ানো ইত্যাদি চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা থাকে।

বহু বছর আগে থেকে বাঙ্গালী জাতির বর্ষবরণ প্রথা প্রচলিত থাকলেও ১৮৬১-৬২ সালে সামাজিক ভাবে বাংলা নববর্ষ উৎযাপন শুরু হয়। যে কারণেই হোক পরবর্তীতে বৈশাখকে প্রথম মাস ধরে সরকারীভাবে ১লা তারিখে বাংলা নববর্ষ উৎসব চালু হয়। কিন্ত বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে গ্রাম বাংলায় এর একদিন পর বাংলা নববর্ষ শুরু হয়। রাজধানী-বিভাগীয় শহর-জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন-গ্রাম–এমনকি জাত-ধর্ম নির্বিশেষে বাংলার ঘরে ঘরে পান্তা উৎসব তথা নববর্ষ উৎযাপিত হয়। দেশের পার্বত্য তিন জেলায় তিন দিন ব্যাপী বর্ষ বরণ ‘বৈসাবী’ উৎসব পালিত হয়। বাংলা শুভ নববর্ষ পয়লা বৈশাখ বা পহেলা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বাংলা সনের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শুভ নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেয়। সে হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন উৎসব। বিশ্বের সকল প্রান্তের সকল বাঙালি এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়, ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি।

---সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা একে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ্য হিসেবে বরণ করে নেয়। নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পড়ে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটমুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার।মেলাতে থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে থাকে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তির। বাংলাদেশে এরকম কুস্তির সবচেয়ে বড় আসরটি হয় ১২ বৈশাখ, চট্টগ্রাম-এর লালদিঘী ময়দান-এ। এটি জব্বারের বলি খেলা নামে পরিচিত।এখন সর্বজনীন ভাবে পালিত হচ্ছে এই দিনটি।দিনটি উপলক্ষে রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩১:১০   ১৫২০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ