
কুমিল্লার মুরাদনগরে ফেসবুকের কমেন্টকে কেন্দ্র করে বন কুমার শীব নামে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ দুটি বাড়ির চারটি ঘরে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউপির কোরবানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রামে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কোরবানপুর গ্রামের শিক্ষক শংকর দেবনাথ এবং আন্দিকুট গ্রামের অনিক ভৌমিক নামের দুই ব্যক্তি তাদের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে ফ্রান্সে প্রদর্শিত ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন করে কমেন্ট করেন।বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হলে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে শনিবার রাতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে রোববার ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে পূর্বধইর পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান বন কুমার শিবসহ ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক বাড়িতে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে।এতে চারটি ঘরে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে রাতেই জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
আরও পড়ুন:
গুজব ছড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আহ্বান
চট্টগ্রামে নিখোঁজ সাংবাদিক গোলাম সারোয়ার উদ্ধার
ছেলেদের ভাতে বিষাক্ত ট্যাবলেট মেশালেন মা, মরলেন নিজে
বুড়িমারীতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: আরও ৪ আসামি গ্রেপ্তার
এরপর কোরবানপুর ও আন্দিকোট গ্রামে চার প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কোরবানপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়ের জানান, স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক শংকর এবং আন্দিকোট গ্রামের অনিক ভৌমিক তাদের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনকে সমর্থন করে কমেন্ট করে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার আরটিভি নিউজকে বলেন, থানা পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ ও আন্দিকোট গ্রামের অনিক ভৌমিককে গ্রেপ্তার করেছে। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এরপর ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা অনভিপ্রেত, এ ঘটনায় আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ভাংচুরের ভিডিও রয়েছে, তা দেখে এবং তদন্ত করে অপরাধী সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমি এবং পুলিশ সুপার দুজনেই ঘটনাস্থলে এসেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৫:১২ ৯৭ বার পঠিত