প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৫ ই জুন বিশ্ব
পরিবেশ দিবস পালন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য
‘’ অর্থাৎ ‘আসুন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি’ এবং
স্লোগান ‘’ অর্থাৎ ‘প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করি,
না পারলে বর্জন করি’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।
মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহে প্রকৃতি ও পরিবেশের গুরুত্ব
অপরিসীম। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকার কারণে
প্রকৃতি ও পরিবেশে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে দূষিত বর্জ্য। বিঘিত হচ্ছে
প্রাকৃতিক ভারসাম্য। আমরা প্রতিদিন যে বর্জ্য তৈরি করি, তার শতকরা প্রায়
১০ ভাগ প্লাস্টিক। প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর
বিশ্বব্যাপী ৫০০ বিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে। যার মধ্যে প্রায় ৮
মিলিয়ন টন প্লাস্টিক সমুদ্রে পতিত হয়। এর ফলে এক মিলিয়ন সমুদ্রচারী পাখি
এবং এক লক্ষ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর মৃত্যু হয়। প্লাস্টিকের অত্যধিক উৎপাদন ও
ব্যবহারের ফলে উর্বর কৃষি জমি থেকে শুরু করে খাল-বিল, নদ-নদী এবং সাগর-
মহাসাগরের প্রতিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার এবং
পুনঃচক্রায়ন একান্ত প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ
অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে
এগিয়ে চলেছে। পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, পরিবহণ, মজুত ও ব্যবহার নিষিদ্ধ
করে ২০১০ সালে আমরা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অধিকতর
সংশোধন করেছি। পলিথিনের বিকল্প পাটের শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও
বাজারজাতকরণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়ক
ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইন, ২০১০ ও পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক
বিধিমালা, ২০১৩ অনুসারে ১৭টি পণ্যের সংরক্ষণ ও পরিবহণে পলিথিনের
পরিবর্তে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন নতুন
অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও
পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা পালন করা হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
শিল্পাঞ্চল, আবাসিক অঞ্চলসহ যে কোন স্থাপনায় বৃষ্টির পানি ও জলাধার সংরক্ষণ
এবং বৃক্ষ রোপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমাদের সরকার নদী খনন, খাল খননসহ
পাড়ে বৃক্ষরোপন বাধ্যতামূলক করেছে। সাগর ও উপকূল অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী,
বৃক্ষরোপন ও ম্যানগ্রোভ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
আমি আশা করি, বিশ্ব পরিবেশ দিবস ;যাপনের মাধ্যমে পরিবেশ
সংরক্ষণ ও প্রতিবেশের টেকসই ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি
পাবে।
আমি ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির
সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয়
বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী
হোক।”
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৩:২৯ ৪৪৪ বার পঠিত