পাওনা বুঝে পেল সাকুরার ছাটাইকৃত শ্রমিকেরা

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » পাওনা বুঝে পেল সাকুরার ছাটাইকৃত শ্রমিকেরা
বৃহস্পতিবার, ২৮ জুন ২০১৮



--- অব্যাহত আন্দোলনে সেলিম ওসামনের দেয়া প্রতিশ্রুতির পর সাকুরা গার্মেন্টের শ্রমকিদের পাওনাদি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। শ্রম-আইন অনুযায়ি বৃহস্পতিবার (২৮জুন) বিকেলে বিকেএমইএ কার্যালয়ে ৪৫ জন ছাটাইকৃত শ্রমিককে টারমিশনের আওতায় এনে তাঁদের মধ্যে ৪১ জনের পাওনাদি ১৪ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়। একই সাথে শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৮জন স্টাফকে সনাক্ত করে তাঁদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদানসহ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এসময় বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন এর পরিচালক জিএম ফারুক, সাকুরা গার্মেন্টের পক্ষে ছিলেন ফ্যাক্টরীর ডিজিএম আলমগীর হোসেন খান সুমন, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা রবিউল, বিকেএমইএ’র লেবার সেকশনের যুগ্ম সচিব রঞ্জন রায় এবং শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন ইউনাইটেড অব ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কস এর নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম।

এ প্রসঙ্গে কাউসার আহম্মেদ পলাশ জানান, সাকুরার শ্রমকিদের পাওনাদি পরিশোধ করায় আমরা আন্দোলনে যাচ্ছিনা। তবে আরো কয়েকটি গার্মেন্টে শ্রমিকদের পাওনাদিসহ বিভিন্ন ঝামেলা রয়েছে। এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

টারমিনেশনে আনা ৪৫ শ্রমিকদের মধ্যে ৪১ জন উপস্থিত থাকায় তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি ৪ জনের মধ্যে ৩ জন বাড়িতে আছেন। আগামী রোববার তাদের পাওনাদি বুঝে নিবেন। আর ১ জন আহত হয়ে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। তিনি সুস্থ্য হয়ে ফিরলে পাওনাদি বুঝিয়ে দেয়া হবে।

এ ছাড়া আহত শ্রমিকরা যারা আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে তাঁদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, শ্রমিকদের সাথে অসদাচারণ, চাঁদা আদায় এবং মারধরের প্রতিবাদে রোববার (২৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের শিবু মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে সাকুরা, রেডিক্যাল, আবির ফ্যাশন, ইরান ও ওসমান গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে চাইলে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে ফতুল্লা থানায় যায়।

সেখানে তারা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে এবং দাবি আদায় ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ না হলে আন্দোলন চালিয়ে যওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা। পরে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের শ্রমিকদের এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা এ অবস্থান কর্মসূচী স্থগিত করে। শ্রমিকদের অভিযোগ ছিলো প্রতিমাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও মালিক পক্ষ তাদের বেতন সময়মত প্রদান করছে না।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মালিক পক্ষের সাথে শ্রমিকদের সমস্যা চলছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ শ্রমিকদের এ দাবী মানছিলোনা। শ্রমিকরা তাদের দাবী পুনরায় মালিকপক্ষের কাছে জানালে তাদের কোনো দাবি মেনে না নিয়ে উল্টো হুমকি, ধামকি ও মারধর করে।

এ ঘটনার পরদিন ফতুল্লায় সোমবার (২৫ জুন) সাকুরা গার্মেন্টে ফের শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলে রোববার (২৪ জুন) সময়মতো বেতন ভাতাসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করা শ্রমিকদের খুঁজে বের করে লাঠিসোটা, হকিস্টিক দিয়ে গার্মেন্টের পি.এম মইনুল, কোয়ালিটি ইনচার্জ নজরুল আরো কয়েকজনের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর করতে থাকেন।

এ সময় ৬ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আহতরা হলেন-সজীব, রিনা বেগম, সাবিনা, মাসুদা, খোকন মন্ডল ও হনুফা বেগম। তাঁদের শহরে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আহতদের মধ্যে সজীবের অবস্থা গুরুতর ছিল। তাঁর মাথায় ১৫টি সেলাই লেগেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিকরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকলে ফতুল্লা থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ এসে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন এবং মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন।

যতক্ষণ পর্যন্ত সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত গার্মেন্টসটি বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। ওই দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সাংসদ সেলিম ওসমান এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

ওই দিন সেলিম ওসমানের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কিছুক্ষণ পর আসেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক কল্যাণ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ। নির্ধারিত সময়ে বেতন ভাতাসহ নানা দাবিতে আন্দোলনে হামলায় নির্যাতিত শিকার শ্রমিকদের পাশে দাড়ানোর কথা সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

এ ঘটনায় পরবর্তীতে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ই ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। র‌্যাডিক্যাল ফ্যাশনের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের এইচআর অলক কুমার মন্ডল ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।

অপরদিকে সাকুরা গার্মেন্টস এর পক্ষে এডমিন অফিসার মনির হোসেন বাদী হয়ে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করেছে। তবে শ্রমিকদের দেয়া ৬টি অভিযোগ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৩:০৪   ৩০১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
গুজব উপেক্ষা করে জনগণ ভ্যাকসিন নিচ্ছে
অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক চিহ্নিত সমস্যাগুলো যথাযথ সংশোধন করা হবে - ভূমি সচিব
৬টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করলো সরকার
ফসল উৎপাদন বাড়াতে অঞ্চল ভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র - এলজিআরডি মন্ত্রী
হঠাৎ অজানা কারণেই বেড়ে গেলো পেঁয়াজের দাম
স্পীকারের সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে-র সৌজন্য সাক্ষাৎ

আর্কাইভ