স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সমবায়ের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৭২৮ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি বলেন, ৫৭ হাজার ১৪৫ টি সমবায়ী সংগঠনের ১ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার ৭২৮ জন সদস্য রয়েছে। বর্তমানে সমবায় সমিতিগুলোর কার্যকরী মূলধন প্রায় ১৪ হাজার ৫৪ কোটি টাকা এবং মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৩২ কোটি টাকা।
আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ-এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘৪৬তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০১৭ ’ উদযাপন ও জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৫ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মাফরূহা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, সমবায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি শক্তিশালী কৌশল। বর্তমান পুঁজিবাজার অর্থনীতির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সমবায় উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যবস্থা নিতে হবে।
উৎপাদনমুখী টেকসই সমবায় উন্নত দেশ গঠনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে দেশে টেকসই সমবায় গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে দক্ষ প্রশাসন, সৎ সমবায়ী নেতৃত্ব, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর সমিতি ব্যবস্থাপনা এবং সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
সমবায়ের নামে কোন অসাধু ব্যক্তি যাতে কোন অপতৎপরতা চালাতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন,আওয়ামীলীগ সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাংলা ভাষায় সমবায় আইন প্রণয়ন করে। এছাড়া “জাতীয় সমবায় নীতিমালা ২০১৩” এবং “সংশোধিত সমবায় আইন ২০১৩” প্রণয়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৩ হাজার ১১৫ টি ছিন্নমূল পরিবারকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং তাদেরকে স্বাবলম্বী করতে ১০৩ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করে দেশের প্রতিটি ঘরহীন মানুষকে আশ্রয় দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘একটি বাড়ী একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার ১৪৫ টি সমবায়ী সংগঠন সৃষ্টি করে হতদরিদ্র মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সকল সংগঠনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা মূলধন সৃষ্টি হয়েছে। দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে বর্তমানে সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর ফলে সুবিধা বঞ্চিত নারী, বেকার যুবক-যুবতির জীবিকা অর্জনের পথ সুগম হয়েছে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্ত্রী উৎপাদনমুখী সমবায় নিশ্চিত করতে প্রতিটি গ্রামে সমবায়ভিত্তিক মৎস্য খামার, গবাদী পশুর খামার, হাঁস-মুরগীর খামার, সামাজিক বনায়ন সমিতির মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়ন, তাঁত ও সেলাই, হস্ত শিল্প, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, মৃৎ শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ কোটি সমবায়ীদের উৎপাদনমূখী সমবায়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানান। এর আগে আজ সকালে তিনি মৎস্য ভবন মোড় থেকে সমবায়ীদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য র্যালীর নেতৃত্ব দেন। র্যালীটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়।
আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী ১০ টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ সমবায়ী ও সমবায় সমিতির মাঝে “জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৫” বিতরণ করেন। পরে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৯:৫১ ৩৯৬ বার পঠিত