জাতিসংঘ বিশ্বের কোথাও নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠায় না। পর্যবেক্ষক পাঠাতে হলে জাতিসংঘকে এখতিয়ার দিতে হবে।’ বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক তাদের এ অবস্থান তুলে ধরেন।
গতকাল শুক্রবার রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের সংবাদ ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মিত্রদের সব ধরনের সহযোগিতাকে স্বাগত জানায়। জাতিসংঘ কি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা করছে?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘না। আমার যত দূর মনে পড়ে, সুনির্দিষ্ট কোনো এখতিয়ার না পেলে জাতিসংঘ এখন নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠায় না।’
বেশ কিছুদিন ধরে জাতিসংঘ মহাসচিবের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি সাংবাদিকরা বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না—এ বিষয়ে প্রশ্ন করছেন।
গত ১৬ অক্টোবর এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, কোনো দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা জাতিসংঘের কাজ নয়। জাতিসংঘকে ওই এখতিয়ার দেওয়া না হলে জাতিসংঘ কোনো দেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে না।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তিবিনির্মাণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্টভাবে সহযোগিতা চাইলে জাতিসংঘ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে পারে। এর বাইরে বিশেষ প্রয়োজনে, নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘকে কোনো রাষ্ট্রের নির্বাচন সম্পর্কিত কাজে সহযোগিতা করার এখতিয়ার অর্পণ করতে পারে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোনো দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদের নির্দেশনা প্রয়োজন। এগুলো বেশ বিরল ঘটনা।
জাতিসংঘ গণহত্যার অপরাধের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণ ও মর্যাদা এবং এই অপরাধ প্রতিরোধবিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস পালন করছে, কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইডের স্বীকৃতির বিষয়ে কাজ করছে না—ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক এমন মন্তব্য করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রথমত, ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর শিকার হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়েই বলছি, অনেক পুরনো ঘটনা নিয়ে আমি মন্তব্য করব না। দ্বিতীয়ত, আমরা বারবার বলেছি, কোনো ঘটনাকে জেনোসাইড হিসেবে চিহ্নিত করার দায়িত্ব জাতিসংঘ মহাসচিবের নয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশি এক সাংবাদিক বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়ে মহাসচিবকে চিঠি লিখেছেন। ওই সাংবাদিক দাবি করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকার দাবিকে অন্যায্য রাজনৈতিক চাপ বলে অভিহিত করেছেন। ‘প্রধান বিরোধী পক্ষকে কারাগারে রেখে একতরফা নির্বাচন’ জাতিসংঘ সমর্থন করে কি না, জানতে চান ওই সাংবাদিক?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘আমি চিঠিটি দেখিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আমরা বিশদভাবে যা বলেছি, সেদিকেই আমি আপনাদের দৃষ্টি দিতে বলব। আমাদের প্রত্যাশা— অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৫:০০ ৮৭ বার পঠিত