
আবারো ভারতের আবদার উড়িয়ে দিলো আইসিসি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের স্বাগতিক হতে চেয়ে বিসিসিআইয়ের আগ্রহকে পাত্তাই দিলো না ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। দর্শক উপস্থিতি এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্সশিপের পরবর্তী তিন ফাইনালের জন্যই আইসিসির প্রথম পছন্দ ইংল্যান্ড। আগামী জুলাইয়ের বৈঠকেই যা পাচ্ছে চূড়ান্ত রূপ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরু থেকেই চলে আসছে এ আলোচনা। ফাইনালের ভেন্যু হবে কোথায়? দলগুলো সারা বছর হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ৬টি করে সিরিজ খেললেও, ফাইনালের জন্য একটি নিরপেক্ষ ভেন্যুর খোঁজ ছিল আইসিসির।
প্রাথমিক অবস্থায় প্রথম তিন সাইকেলের ফাইনাল ভেন্যু ঠিক করা হয় ইংল্যান্ডে। ২০২১ সালে ম্যাচ হয় সাউদাম্পটনে, ২০২৩ সালে ওভালে আর এবার হয়ে গেল ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে। অনেকদিন ধরেই ইংল্যান্ডের এই স্বাগতিক হয়ে থাকাটা পছন্দ ছিল না বিসিসিআই এর। সমালোচকদের মতে, ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজেদের রেকর্ড ভালো নয় বলে বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল টিম ইন্ডিয়া।
তাই, খোলাখুলিভাবে অনেকবারই তাদের কর্তা ব্যক্তি থেকে শুরু করে ক্রিকেটাররা দাবি জানিয়েছিল ভারতে এই ফাইনাল ম্যাচ আয়োজনের। সবসময় ইংল্যান্ডে ফাইনাল হলে, এই আসরের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলেও মত ছিল তাদের। আর এবার যখন আইসিসির সর্বেসর্বা হয়ে উঠেন জয় শাহ, তখন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ভারতে হওয়াটা ছিল সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু এত কিছুর পরও আশা পূরণ হচ্ছে না ভারতবাসীর। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের খবর, প্রথম তিন আসরের মতো আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরবর্তী তিন আসরের ফাইনালেরও আয়োজক থাকবে ইংল্যান্ড। বিষয়টি ইতোমধ্যে ইসিবিকে জানিয়ে দিয়েছে আইসিসি। ভারতের আগ্রহ থাকলেও, বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না আইসিসির সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে।
আগামী জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে বার্ষিক সভায় বসবে আইসিসির সদস্য দেশগুলোর কর্তা ব্যক্তিরা। সেখানেই চূড়ান্ত হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের ভবিষ্যত। তবে, সেখানে নিরঙ্কুশভাবেই এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। কারণ, আইসিসির গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে ইতোমধ্যে ২০২৭, ২৯ এবং ৩১ এর ভেন্যু নির্ধারণে আলোচনা শুরু করেছে ইসিবি। জুলাই এ আসবে যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে ভারতের চেয়ে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দিয়েছে এর বহুত্ববাদ। নানা সংস্কৃতির মানুষ দেশটিতে বসবাস করায়, ফাইনালে দর্শক নিয়ে কখনই চিন্তা করতে হয়নি আইসিসিকে। এবারের ফাইনালের প্রথম তিন দিনে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ৭৫ হাজারেরও বেশি দর্শক। টাইমজোনের কারণেও পিছিয়ে গেছে ভারত। সঙ্গে আছে জুন মাসে আবহাওয়ার আনুকূল্য।
এগুলো ছাড়াও ভারতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল না দেওয়ার অনেক বড় একটা কারণ প্রতিবেশিদের সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা। ভারত-পাকিস্তান বৈরি সম্পর্কের কারণে এখন হরহামেশাই বিপাকে পড়তে হয় আইসিসিকে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিয়ে তাই নতুন করে আর ঝামেলা চায় না ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কারণ, পাকিস্তান যদি ফাইনালে উঠে যায়, তাহলে সে ম্যাচ কোথায় হবে তা নিয়ে অন্তত ম্যাচের আগে ভাবতে চায় না আইসিসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩১:৩৭ ১১ বার পঠিত