
জামালপুর প্রতিনিধি : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই পালায়। একাত্তরেও তারা পালিয়েছিল, পঁচাত্তরেও পালিয়েছিল এবং এবারও পালিয়ে গেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) জামালপুর জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, “শেখ হাসিনা আল্লাহর সাথে পাল্লা দিতো, বলতো এই দেশ নাকি ওর বাপের। কিন্তু এই দেশের মাটি, বাতাস, আলো সবই আল্লাহর দেওয়া।” তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি দুর্যোগে জিয়াউর রহমান হাজির হয়েছিলেন। একাত্তর সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণে মানুষ যখন দিশেহারা, ২৬ মার্চ রাতে যখন রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ হয়, তখন তিনি নিজে অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন। তিনি তখন যুবক, একটি থ্রি নট থ্রি হাতে নিয়ে গুলি করেছিলেন।
টুকু দাবি করেন, দেশের মানুষ যখন দিশেহারা, তখন রাতের আঁধারে শেখ মুজিব পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। তিনি জানান, পাকিস্তান বাহিনীর আক্রমণে দিশেহারা হয়ে তিনি যখন একটি ট্রেনিং ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, তখন গ্রামের এক বাজারে গিয়ে শুনতে পান একজন সেনা কর্মকর্তা স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন—”আই মেজর জিয়া, ডিক্লেয়ার্ড দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টস অব বাংলাদেশ।” এরপর দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি বলেন, শেখ মুজিবের সাথে তখন আওয়ামী লীগের নেতারাও পালিয়ে গিয়েছিলেন।
টুকু আরও বলেন, দেশ স্বাধীন হলে আওয়ামী লীগ দেশে ফিরে আসে এবং লুটপাট চলতে থাকে। মানুষ তখন ভাতের বদলে কচুরিপানা, কচু আর ফ্যান খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। পঁচাত্তরে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর আবার দেশের হাল ধরেন জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এত ভালো কাজ করে যে তাদের পালাতে হয়! এবারও শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা পালিয়ে গেছেন।”
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। তিনি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ইঙ্গিত করে বলেন, “জয় আমেরিকার শীর্ষ ধনীদের একজন। শেখ হাসিনার বোন রেহানাও হাজার হাজার কোটি টাকা মেরেছেন, শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলও তাই করেছেন। দেশের লাখ লাখ কোটি টাকা মেরে দিয়ে শেখ হাসিনার পরিবার ও দলের নেতারা সবাই পালিয়ে গেছেন।”
সোহেল আরও বলেন, “শেখ হাসিনা নিজে বলেছেন তার পিয়ন নাকি চারশো কোটি টাকার মালিক! পিয়ন যদি চারশো কোটি টাকার মালিক হয় তাহলে শেখ হাসিনা কত কোটি টাকার মালিক!” তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে চুরি করা টাকা খরচ করে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সোহেল বলেন, “জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ বিক্রি করে কেউ অপকর্ম করবেন না। কেউ বাসস্ট্যান্ডে, সিএনজি স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করবেন না। হারাম খাওয়া নিষেধ, চাঁদাবাজি করে যারা খাবেন তারা শুকরের মাংস খাবেন। আপনারা কেউ শুকরের মাংস খাবেন না।”
জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির আরেক যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম সহ একাধিক কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩১:৫৫ ৬২ বার পঠিত