সাইফুর রহমানের কৌশল ও নীতি অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করেছিল : ড. মঈন খান

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » সাইফুর রহমানের কৌশল ও নীতি অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করেছিল : ড. মঈন খান
শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫



সাইফুর রহমানের কৌশল ও নীতি অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করেছিল : ড. মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মঈন খান বলেছেন, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে বাংলাদেশের অর্থনীতির রূপকার বলা যায়। তার কনজারভেটিভ নীতি অনুসরণ করে দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তী ফ্যাসিবাদী সরকার সেই নীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে লুটপাট ও দুর্নীতি দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে সিলেট শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

ড. মঈন খান বলেন, ‘বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে সাইফুর রহমানের সর্বশেষ আধুনিক ভ্যাট পদ্ধতির সংযোজন দেশের অর্থনীতির রক্ষাকবচ ছিল। এই পদ্ধতি ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশ স্থিতিশীলভাবে টিকে থাকতে পারে না। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ এই পদ্ধতির বিরোধিতা করেছিল। তারা রাজপথে আন্দোলন ও হরতাল করেছিল। সেই সময়ে সাইফুর রহমান বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে এই পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হতো।’

স্মৃতিচারণ কালে সাবেক মন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবা সাইফুর রহমানের সহকর্মী ছিলেন। তিনি যখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসেন, তখন আমার বাবা আব্দুল মোমেন খান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে আমি নিজেও তার সহকর্মী হওয়ার সুযোগ পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে বেগম খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন আমি এবং সাইফুর রহমান পাশাপাশি মুখোমুখি কক্ষে বসে কাজ করেছি। প্রয়োজন হলে তার কাছে পরামর্শ নিতে যেতাম। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগের সময়ও তিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং স্নেহের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।’

ড. মঈন খান সিলেটের তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, এম সাইফুর রহমানের অনেক বড় অর্জন এখনকার তরুণ প্রজন্ম জানে না। সাইফুর রহমান ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সুবর্ণ জন্মে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং সেই সময় তাকে বিশ্ব ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এটি জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব।

তিনি বলেন, সাইফুর রহমান ১৯৬৯ সালে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে আসেন। তখন দেশে সিএ ডিগ্রিধারী মানুষের সংখ্যা ছিল খুব কম। এরপর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বাজেট ঘোষণা করেছেন। ৩৬ বছরে তিনি এক ডজন বাজেট ঘোষণা করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তার প্রতি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন।’

ড. মঈন খান তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানান, ‘সাইফুর রহমানকে নিয়ে গবেষণা করুন। তিনি দেশের অর্থনীতির রূপকার ছিলেন এবং পুরো অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন সাধন করেছেন। তার জীবন ও নীতি থেকে শেখার অনেক কিছু রয়েছে।’

সভায় স্মৃতিচারণ কালে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম, নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর ড. মো. ইকবাল, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মাহবুব এলাহী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, সিলেটের সভাপতি ডা. শামিমুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, মিফতাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম এবং সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। সভা সঞ্চালনা করেন বাচিক শিল্পী ও কবি সালেহ আহমদ খসরু, ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ খান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ। স্মরণসভায় বিএনপিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

এর আগে, সাইফুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাদ জুমা সিলেটের বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া, মিলাদ মহফিল ও শিরনি বিতরণের আয়োজন করা হয়।

বক্তব্যে ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘কৃষিনির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বনির্ভর অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত করতে এম সাইফুর রহমান অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। একজন রাষ্ট্রপ্রধানের মতো তিনি সফল অর্থনীতিবিদ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।’

সভাপতির বক্তব্যে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমি এম সাইফুর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছি। তার স্মৃতি বলে শেষ করা সম্ভব নয়। শেষবার সিলেটে আসার সময় তিনি বলেছেন, যতদিন দেশনেত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন, তা হবে মঙ্গলের জন্য। তোমরা তাকে ছেড়ে যাবে না এবং মুনাফিকদের সঙ্গ ত্যাগ করবে। এরপর তিনি সিলেট ছেড়ে যান আর ফিরলেন না।’

এর আগে, সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি, এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ এবং মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া, কবর জিয়ারতসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৩:১৪   ২৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


সাইফুর রহমানের কৌশল ও নীতি অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করেছিল : ড. মঈন খান
আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ল্যাবরেটরিতে : রিজভী
মহানবী (সা.) শিখিয়েছেন ন্যায়বিচার সমগ্র মানবজাতির মৌলিক অধিকার : প্রধান বিচারপতি
ইসলামাবাদে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) উদ্‌যাপিত
উজবেকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন
আমাদের সামনে এখন ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতি : সারোয়ার তুষার
মাসুদুজ্জামানের পক্ষে তারেক রহমানের ৩১ দফা প্রচার
তারেক রহমান ও বিএনপিকে নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে: সাখাওয়াত
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ধর্মীয় প্রতিনিধিদল পাঠাতে একমত
জামালপুরে নৌকাডুবিতে নারী নিহত, নিখোঁজ শিশুসহ অনেকে

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ