জামালপুর প্রতিনিধি : শেষ কবে এত বেশি দামে সবজি কিনেছি মনে করতে পারছি না। ৮০-১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতারা যেন মুখস্থ বুলি আওড়াচ্ছেন—যা-ই চাই, কেজি ১০০ টাকার কম নেই।’—জামালপুরের ইসলামপুর বিজয় চত্বর বাজারে সবজি কিনতে গিয়ে ক্রেতা আলামিনের এভাবেই ক্ষোভ ঝরল।
বুধবার (০১ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির এমন চড়া দামে নাকাল ক্রেতারা। কেউ বাধ্য হয়ে অল্প কিনছেন, কেউ আবার সবজি না কিনেই ফিরছেন খালি হাতে।
ক্রেতা মুনি আক্তার বলেন, ‘আমাদের আয় সীমিত। সংসারে একদিকে বেশি খরচ হলে অন্যদিকে টান পড়ে যায়। সবজির দাম বাড়ায় সংসার চালানোই কঠিন হয়ে গেছে। আগের চেয়ে কম নিচ্ছি, তবে দু-এক কেজি না কিনলে তো রান্নাই সম্ভব নয়।’
বিক্রেতারা জানান, টানা বৃষ্টিতে সবজির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। ফলে দাম বেড়েছে। বিজয় চত্বরের সবজি বিক্রেতা সবুজ হোসেন বলেন, ‘এখন কম উৎপাদনের মৌসুম। এর ওপর অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তাই বাজারে সবজির সরবরাহ কম, দাম বেশি।’
বাজারে আলু, বই কচু ও কাঁচা পেঁপে ছাড়া আর কোনো সবজি ৮০ টাকার কমে মিলছে না। ঢ্যাঁড়স, পটল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। বরবটি, করলা, বেগুন, উস্তা, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, ধুন্দল ও কাঁকরোলের দাম বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।কাঁচামরিচের দাম আরও বেশি—প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩২০ টাকা। এক মাস আগে যা ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, লাউ ১০০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার ফালি ৪০ টাকা কেজি দরে।
সবজির পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন ডিম ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৪০ টাকা। পাড়ার দোকানে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা দরে। মাত্র এক মাস আগেও ডজনপ্রতি ডিমের দাম ছিল ১২০-১২৫ টাকা।
ইসলামপুরের ঠাকুরগঞ্জ নৃত্যবাজারের ডিম বিক্রেতা বুলু মিয়া কালবেলাকে বলেন, ‘সবজির দাম বাড়লে ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমেছে। তাই দামও বেড়েছে।’ ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০-২০ টাকা বেশি। সোনালি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে।
সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে না এলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জীবনে আরও কঠিন সংকট আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩০:৩৬ ৮০ বার পঠিত