
দেশে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদরাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বুধবার (১ অক্টোবর) সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া এর ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আলিয়া পদ্ধতির মাদরাসার অবদান স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো। অনেক যোগ্য ব্যক্তি এখানে তৈরি হয়েছেন। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মাদরাসার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আরবি, ইংরেজি জানলে বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও বৃত্তি পাবেন।
রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে যুগ যুগ ধরে আলিয়া মাদরাসা ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করতে হবে। এ সময় ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমদের আল্লাহ এক, কুরআন এক, কেবলা এক। এই মিল আমাদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে। সবাই ভোট দিতে পারবে। ভোট হবে দিনের বেলার, রাতের বেলা নয়। নতুন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পুরানো ঠিকানায় চলে যাবো। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সুযোগ সব সময় আসে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন একে অপরের হাত ধরার সুযোগ। সুযোগ সব সময় আসে না। একবার সুযোগ আসতে ৫৪ বছর লেগে যায়। আবার কবে সুযোগ আসবে জানি না। তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যই শক্তি, শক্তিই শান্তি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে আরও যুগোপযোগী করার চেষ্টা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব ধরনের শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকলেও ইচ্ছের কমতি নেই। আলোকিত মানুষ তৈরির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে আলিয়া মাদরাসাকে। সরকার এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।
অতীতে ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নানাভাবে হয়রানি হতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পোশাকের কারণে নাগরিক মর্যাদা নিয়ে অনেকে শহরে চলতে পারেনি। জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছিল। সরকার অবশ্যই সেসবের বিচার করতে বদ্ধপরিকর। শাপলা হত্যাযজ্ঞ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল সেই সময়ের সরকার। বুদ্ধিজীবীদের বিরাট অংশ এতে নীরব ছিলেন এবং সে হত্যাযজ্ঞকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। ইতিহাসকে মুছে ফেলার পরিকল্পনা ছিল।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সত্যকে ধামাচাপা দেয়া যায় না, কোনো একসময় জবাবদিহি করতে হয়। সে সময় এখন এসেছে। সমাজে বিভেদ সৃষ্টিকারী যেসব প্রচেষ্টা ছিল সেসবের মূলোৎপাটন করতে হবে। সবাই মর্যাদার সঙ্গে যেন নিজ বিশ্বাস পালন করতে পারে। বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর দায়িত্ব হচ্ছে সহিষ্ণুতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করা। এ সময় ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকেও আলিঙ্গন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৪:৪২ ৪৫ বার পঠিত