
গেল বছর ক্যারিয়ারের ২৮ বছর পূর্ণ করছেন বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রায় বচ্চন। বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবনে মণিরত্নম, ঋতুপর্ণ ঘোষ এবং সঞ্জয় লীলা বানশালির মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করে তিনি প্রমাণ করেছেন নিজের অভিনয়শক্তি ও ব্যক্তিত্বের গভীরতা।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মণিরত্নমের সঙ্গে ঐশ্বরিয়ার সিনেমার যাত্রা যেন তার অভিনয়জীবনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। কারণ, ১৯৯৭ সালে এই পরিচালকই ‘ইরুভার’ ছবির মাধ্যমে তাঁকে বড় পর্দায় এনেছিলেন। এরপর ২০০৭ সালে ‘গুরু’, ২০১০ সালে ‘রাবণ’ ও সর্বশেষ ২০২২ সালে ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ সিনেমায় তাকে নতুনভাবে তুলে ধরেন মণিরত্নম।
‘ইরুভার’ সিনেমায় ঐশ্বরিয়ার দুই চরিত্র (পুষ্পাবল্লী ও কল্পনা) ছিল শিল্পীজীবনের শুরুর দিকের। একদিকে শান্ত, বিনয়ী গৃহবধূ; অন্যদিকে উচ্চাভিলাষী নায়িকা। এই দ্বৈত চরিত্রের মধ্য দিয়েই পরিচালক তার রূপকে নতুনভাবে প্রকাশ করেন। ফলে গ্ল্যামার থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক টানাপড়েনের প্রতীক হয়ে ওঠেন ঐশ্বরিয়া।
‘গুরু’ (২০০৭) সিনেমায় ঐশ্বরিয়া ছিলেন আরও বাস্তব, মানবিক। স্বামী গুরুকান্ত দেশাইয়ের উচ্চাভিলাষের পাশে তিনি ছিলেন নীরব শক্তি। সিনেমায় তার চরিত্র সুজাতা শুধু সহধর্মিণী নন, স্বামীর সাফল্যের ভেতর থেকে নিজেকে না হারানো এক নারী।
এরপর আসে ‘রাবণ’ (২০১০), যেখানে ঐশ্বরিয়া হাজির হন একেবারেই ভিন্ন রূপে। মণিরত্নম এখানে নায়িকাকে নৈতিক দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে বসিয়েছেন, যেখানে সীতা ও রাবণের গল্প আর শুধু পৌরাণিক নয়-মানবিক ও অনিশ্চিত।
‘পোন্নিয়িন সেলভান’-এ ঐশ্বরিয়া যেন নিজের যাত্রার পূর্ণতা খুঁজে পান। নন্দিনী চরিত্রে তিনি সৌন্দর্যকে অস্ত্র হিসেবে নয়, বুদ্ধির কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেন। মণিরত্নমের দৃষ্টিতে এটি ছিল প্রতিশোধ, রাজনীতি ও নারী শক্তির এক গভীর প্রতীকী প্রকাশ।
‘ইরুভার’-এ তিনি ছিলেন প্রেরণা, ‘গুরু’-তে সঙ্গিনী, ‘রাবণ’-এ বেঁচে থাকা নারী, আর ‘পন্নিয়িন সেলভান’-এ প্রতিশোধ পরায়ণ নারী। সবকিছু মিলে নির্মাতা মণিরত্নমের কাছে ঐশ্বরিয়া হয়ে ওঠেন অনন্য এক অভিনেত্রী।সূত্র: আউটলুক
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪১:২৯ ৯ বার পঠিত