
জামালপুর প্রতিনিধি : ডিসেম্বর মাস বাঙালি জাতির জন্য এক গৌরবের মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিতাড়িত হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেই ধারাবাহিকতায়, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল।
ইসলামপুরবাসীর জন্য অত্যন্ত গৌরবের এই দিনটি ঘিরে প্রতি বছর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানান কর্মসূচি পালন করলেও, এবছর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বড় কর্মসূচি গ্রহণ না করায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সুধী সমাজের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর হাজার হাজার মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে দিয়ে ইসলামপুর থানা চত্বরে সমবেত হন। এই দিন জালাল কোম্পানির কমান্ডার প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন স্বাধীনতার প্রথম বিজয় পতাকা উত্তোলন করে ইসলামপুরকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন।
প্রতি বছর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হলেও এবছর ব্যতিক্রম হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন জানান, “বিগত বছরগুলোতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করতো। কিন্তু এবছর সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ছে না।”
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদের কোনোভাবেই অবগত করা হয়নি। নিজেরা যে কোনো কর্মসূচি পালন করবো, সেই সাহসও পাচ্ছি না।”
আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম, জহিরউদ্দিন চৌধুরী (ফুলু) কর্মসূচির অনুপস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে “মতের গড়মিল” রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেন। তিনি জানান, কি কারণে ৭ ডিসেম্বর ইসলামপুর হানাদার দিবসের কর্মসূচি নেই, সেই বিষয়ে পরে জানানো হবে।
হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের কর্মসূচির বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে, সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুসাইন তড়িঘড়ি করে দুপুর ২ টা ১৪ মিনিটে একটি র্যালি বের করেন। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও এই র্যালিতে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেরিতে হলেও একটি র্যালি বের করা হলেও, অন্যান্য বড় কর্মসূচির অনুপস্থিতি ইসলামপুরের মুক্তিকামী মানুষকে কিছুটা হতাশ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২৯:০০ ৪৪ বার পঠিত