রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ২০ নভেম্বর কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“গণতন্ত্র, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত
কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি
জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ এবং
সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এক অকুতোভয় যোদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯১১
সালের ২০ জুন বরিশালে। সেসময় বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ
একেবারে সীমিত থাকলেও তিনি নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং ছোটবেলা
থেকেই কবিতাচর্চা শুরু করেন। সুললিত ভাষায় ও ব্যঞ্জনাময় ছন্দে তাঁর কবিতায়
ফুটে উঠত সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের সার্বিক চিত্র। তিনি
নারীসমাজকে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আজীবন
সংগ্রাম করে গেছেন। মহান ভাষা আন্দোলন, স্বাধিকার, মুক্তিযুদ্ধসহ গণতন্ত্র ও
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলনে তিনি আমৃত্যু সক্রিয় ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য যে আন্দোলন শুরু
হয়েছিল, তিনি ছিলেন তার অন্যতম উদ্যোক্তা।
কবি সুফিয়া কামাল নিজ উদ্যোগে শুধু নিজেকে শিক্ষিত করেননি,
পিছিয়ে পড়া নারী সমাজকে শিক্ষার সুযোগ করে দেয়ারও আন্দোলন শুরু
করেছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ’ নারী অধিকার আদায়ের
এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
আন্দোলনে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে ভূষিত
করা হয়।
কবি সুফিয়া কামাল তাঁর কাব্য প্রতিভা ও কর্মের গুণে আমাদের মাঝে
চিরকাল বেঁচে থাকবেন। মহীয়সী এ নারীর জীবনাদর্শ ও সাহিত্যকর্ম একটি
বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ ও
অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আমি কবি সুফিয়া কামালের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৭:১০ ২২৩ বার পঠিত