বৃহস্পতিবার( ২৫ জানুয়ারি) দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন এই তফশিল ঘোষণা করবে। আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারী নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ৩৪৮ জন বলে সংসদ সচিবালয় থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বুধবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বৈঠকে সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের সচিব ও দুইজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের খসড়া তফশিল, এই নির্বাচনের ভোটার তালিকাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইন অনুযায়ী তারা স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানান, নির্বাচনের জন্য কমিশন সংসদ সচিবালয় এবং সংসদের কী ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পেতে পারে তা নির্ধারিত আছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তারা এসেছিলেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের খসড়া তফশিল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলোচনা করেছেন। তারা কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে। নির্বাচন আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরো জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংসদ সরবরাহ করেছে। ওই তালিকায় ভোটার হিসেবে ৩৪৮ জন এমপির তালিকা দেওয়া হয়েছে। দুইজন এমপির মৃত্যুর কারণে দু’টি আসন শুন্য আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসোবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের নব্বই থেকে ষাট দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল। ফলে সংবিধান অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হতে হবে।
এবিষয়ে স্পিকার জানান, ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে- নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি।
সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় একবারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা। এরপর থেকে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আইন অনুযায়ী, একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন এমপিরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪২:১৯ ৩৬৪ বার পঠিত