কুমিল্লার দেবিদ্বারে পুলিশ সদস্য, সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক, স্বামী-স্ত্রী এবং একই পরিবারের ৫জনসহ শতাধিক করোনা শনাক্ত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ওই সূত্রটি বলছে, শুক্রবার কুমিল্লা জেলায় নতুন করে হয়েছেন ২৮ জন। এর মধ্যে ২৫ জনই রয়েছেন দেবিদ্বার উপজেলার। পুরো জেলায় মোট আক্রান্তের ২৪৮ জনের মধ্যে শতাধিক শনাক্ত রয়েছেন দেবিদ্বার উপজেলার।
অন্যদিকে, জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে দেবিদ্বার উপজেলারই রয়েছেন ৮জন। শতাধিক আক্রান্তের মধ্যে ‘হটস্পট’ খ্যাত উপজেলার নবীয়াবাদ এলাকার গৌরাঙ্গ (৫২) ও লায়লা আক্তারের (২৬) পরপর দুইবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাদেরকে সুস্থ ঘোষণা করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহাম্মদ কবীর। মোট ১০২ জন শনাক্তের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি আছে তিনজন এবং বাড়িতে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বাকিরা। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগসূত্রে জানা যায়, ৫৭ টি রিপোর্টের মধ্যে নতুন করে ২৫টি পজেটিভ ও ২৭টি নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে একই পরিবারের ৫জনসহ, দুই পুলিশ সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন অ্যাম্বুলেন্সও চালক রয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে পজেটিভদের মধ্যে নবীয়াবাদের রয়েছেন ১০ জন, দেবিদ্বার গোমতী আবসিক এলাকায় একই পরিবারের পাঁচ জন, দেবিদ্বার হাসপাতাল রোডের ক্রান্তিধারায় বাসায় স্বামী-স্ত্রী দুইজন, বারেরা, বড় আলমপুর, ফতেহাবাদ, বল্লভপুর, জীবনপুর একজন করে এবং দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক একজন রয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহাম্মদ কবীর জানান, এ উপজেলায় আক্রান্তের হার আশংকাজনক হারে বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে শতাধিক অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন, শুক্রবার হাতে পাওয়া এ উপজেলার ৫৭ টি রিপোটের মধ্যে ২৫ জনের পজিটিভ ফল আসে। এদের মধ্যে রেড জোন খ্যাত উপজেলার নবীয়াবাদ গ্রামের রয়েছেন ১০জন। এছাড়াও উপজেলা সদরের গোমতী আবসিক এলাকায় একই পরিবারের ৫ জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কের কাঁন্তিধারা বাড়িতে ষাটোর্ধ্ব স্বামী-স্ত্রী, দেবিদ্বার থানায় ২ জন এবং বারেরা, বড় আলমপুর,ফতেহাবাদ, বল্লভপুর, জীবনপুর গ্রামে একজন করে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি রয়েছেন। আরও পজিটিভ তালিকায় রয়েছেন দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক। এ নিয়ে এ উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০২ জনে। এদের মধ্যে ইতিমধ্যে ব্যবসায়ী, হোমিও ডাক্তার ও নারীসহ মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি আছে ৩ জন এবং বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছে ৯১ জন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রাকিবুল হাসান জানান, একজন ব্যাক্তির সংক্রমণ থেকে কিছু পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি অত্যান্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার। জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রশাসনের দিবা-রাত্রি সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকা সত্তে¡ও দেবিদ্বারে করোনার পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে। তিনি সকলকে ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে আরও বলেন, এ সংকটময় সময়ে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থেকেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৪:৩৮ ১৪১ বার পঠিত
