
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ধনতলা কমিউনিটি ক্লিনিকটি গত সাত মাস ধরে বন্ধ থাকায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এলাকাবাসী জানান, এক বছর আগেও এই ক্লিনিকটি তাদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ছিল। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তাদের কয়েক কিলোমিটার দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থের অপচয় হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন গর্ভবতী নারী ও শিশুরা, যারা নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এই ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, “ছয় বছর ধরে এই ক্লিনিকটি সেবা দিচ্ছিল, কিন্তু গত সাত মাস ধরে এটি বন্ধ। এখন সামান্য অসুস্থতার জন্যও আমাদের অনেক দূরে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও টাকা দুটোই নষ্ট হচ্ছে। গর্ভবতী মা, শিশু এবং বৃদ্ধরা বেশি সমস্যায় আছেন।”
আরেক বাসিন্দা মোকশেদা আক্তার বলেন, “আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া সম্ভব নয়। জরুরি অবস্থায় এই ক্লিনিক না থাকায় বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে স্থাপিত এই ক্লিনিকটি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়। কয়েক বছর ভালোভাবে চলার পর হঠাৎ করে ২০২৫ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়।
ক্লিনিকের সেবাদানকারী নুরুন্নাহার আক্তার জানান, তিনি গত বছরের জুন মাসে গোঠাইল কাজীবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকে বদলি হয়েছেন।
বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বহুবার স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপস্থিতি ও সেবা বন্ধ থাকার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছেন। তিনি সরকারের কাছে দ্রুত নতুন কর্মী নিয়োগ, পর্যাপ্ত ওষুধের সরবরাহ এবং ক্লিনিক ভবন সংস্কারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ.এ.এম. আবু তাহের জানান, সেবাদানকারী নুরুন্নাহার আক্তার অন্যত্র চলে যাওয়ায় ক্লিনিকটি বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, নতুন একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বন্ধ থাকবে। তিনি আরও জানান, শীঘ্রই একজন নতুন সেবাদানকারী নিয়োগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০১:০৩ ১১১ বার পঠিত