
আসন্ন ৪৭তম আসিয়ান সম্মেলনকে ঘিরে জমজমাট প্রস্তুতির পাশাপাশি মালয়েশিয়া এখন বিশ্ব কূটনীতির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে কুয়ালালামপুরে শুরু হতে যাচ্ছে এই মহাসম্মেলন, যা দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক আয়োজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আগামী রোববার (২৬ অক্টোবর) থেকে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পর্যন্ত কুয়ালালামপুর কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ার বৃহত্তম এই আঞ্চলিক শীর্ষ বৈঠক।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, রাশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মালয়েশিয়ার রাজধানী এখন কূটনৈতিক কার্যক্রমে মুখর।
মালয়েশিয়ার তথ্য অনুযায়ী, সম্মেলনটি কভার করতে ২ হাজার ৮৫৪ জন আন্তর্জাতিক সাংবাদিক নিবন্ধন করেছেন, যা দেশটির বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি মালয়েশিয়ার জন্য এক বড় ধরনের গ্লোবাল ব্র্যান্ডিংয়ের সুযোগ তৈরি করেছে।
সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার এবং ফিলিস্তিন ইস্যুসহ বৈশ্বিক মানবিক সংকট। মালয়েশিয়ার মন্ত্রী ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিরা এই মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, সরবরাহ শৃঙ্খল সুরক্ষিত করা এবং বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনে মনোনিবেশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কূটনৈতিক নেতৃত্ব ও টেলিফোন কূটনীতি বিশ্বনেতাদের একত্রিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় মালয়েশিয়ার বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক উপাদানের ওপর শূন্য শুল্ক বজায় রাখাকে প্রধান এজেন্ডা হিসেবে তুলে ধরেছেন।
অর্থনীতি ও রাজনীতির পাশাপাশি মালয়েশিয়া সম্মেলনে নিজেদের জাতীয় মূল্যবোধ, গ্লোবাল সাউথ উদ্যোগ এবং বহুপাক্ষিক নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে। একইসঙ্গে গাজায় ফিলিস্তিনিদের মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের মাধ্যমে তারা তাদের স্বাধীন কূটনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করছে।
বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধনকারী হিসেবে মালয়েশিয়ার ভূমিকা দেশটির প্রতি বিদেশি বিনিয়োগ, কূটনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণে সহায়তা করবে।
সম্মেলনের সফল আয়োজন মালয়েশিয়ার লজিস্টিকস, নিরাপত্তা ও আতিথেয়তা সক্ষমতাকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরবে। আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বে দেশটি এক পরিপক্ব, আত্মবিশ্বাসী ও বিশ্বমুখী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। এখন এই বৈশ্বিক মনোযোগকে বাস্তব অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সাফল্যে রূপান্তর করা মালয়েশিয়ার প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৫:৩৫ ২৩ বার পঠিত