
তিন বছরে আগের ডিসেম্বরের স্মৃতি হয়ত এখনও নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত করে ফুটবলপ্রেমীদের। কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স। মেসি-ডি মারিয়ার দুর্দান্ত নৈপূণ্যের জবাবে এমবাপ্পের হ্যাটট্রিক, টাইব্রেকারে এমি মার্টিনেজের নায়ক হয়ে ওঠা; অনেকের চোখে এটিই বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা ফাইনাল। যে ফাইনালের পর মেসি আর আর্জেন্টিনা ফরাসিদের চোখের বালি হয়ে উঠেছিলেন।
আরও একটি বিশ্বকাপ দোরগোড়ায়। আগামী বছর জুনে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোয় বসবে বিশ্বকাপের আগামী আসর। তবে, কাতার বিশ্বকাপের সেই ফাইনালের রেশ এখনও রয়ে গেছে সমর্থকদের চোখে। সেই ফাইনালের পর আর মুখোমুখি হয়নি আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স। তবে, আগামী বিশ্বকাপের ঠিক আগে মুখোমুখি দেখা হয়ে যেতে পারে এই দুই দলের।
২০২৬ সালে বিশ্বফুটবলের দুই সুপারস্টার মেসি-এমবাপ্পের তাদের নিজ নিজ দলের হয়ে আরেক দফা দ্বৈরথের সম্ভাবনা জেগেছে। নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতির জন্য ক্লাব ছেড়ে খেলোয়াড়রা এরই মধ্যে নিজ নিজ জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন। আর্জেন্টিনা প্রস্তুতি নিচ্ছে অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য, অন্যদিকে ফ্রান্স ব্যস্ত পরবর্তী বিশ্বকাপের যোগ্যতা নিশ্চিত করতে। তবে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দুই দেশই নিকট ভবিষ্যতে একে অপরের মুখোমুখি হওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ডবেল আমারিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন (এফএফএফ) ২০২৬ এর মার্চের আন্তর্জাতিক বিরতিতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের সম্ভাবনা যাচাই করছে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফ্রান্স শীর্ষস্থানীয় দলগুলোর সঙ্গে একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে চায়, যে তালিকায় মেসির আর্জেন্টিনা রয়েছে তালিকার শীর্ষে।
তবে এই ম্যাচ আয়োজনের প্রধান শর্ত হলো — নভেম্বরের উইন্ডোতেই ফ্রান্সের বিশ্বকাপে যোগ্যতা নিশ্চিত করা। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে মার্চ মাসে তাদের সূচি ফাঁকা থাকবে, যা আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেই প্রতীক্ষিত ম্যাচ আয়োজনকে সম্ভব করে তুলবে।
বর্তমানে ফ্রান্স ইউরোপীয় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘ডি’তে চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। লে ব্লুরা বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) মুখোমুখি হবে ইউক্রেনের (৭ পয়েন্ট), এরপর রোববার (১৬ নভেম্বর) আজারবাইজানের বিপক্ষে খেলবে। ইউক্রেনের বিপক্ষে জয় অথবা দুই ম্যাচে অন্তত চার পয়েন্ট পেলে ফ্রান্সের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে।
এদিকে, অনিশ্চয়তা কাটেনি ফাইনালিসিমা ম্যাচকে ঘিরে। স্প্যানিশ ও আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশন মার্চ মাসেই এই ম্যাচ আয়োজনের বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন তারিখ হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ২৭ মার্চ। তবে স্পেনেরও বিশ্বকাপের যোগ্যতা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন, তাই এখনো ম্যাচের তারিখটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
নভেম্বরের উইন্ডোতে আর্জেন্টিনার একমাত্র প্রতিপক্ষ অ্যাঙ্গোলা। আগামী শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) লুয়ান্ডায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ফ্রান্সের মতো একটি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ম্যাচ তাদের জন্য ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে বড় পরীক্ষা হতে পারে। মেসি ও এমবাপের সম্ভাব্য পুনর্মুখোমুখি লড়াই নিঃসন্দেহে আবারও বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মনোযোগ কেড়ে নেবে। এই দুই তারকাই আগামী আসরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ও শিরোপার অন্যতম দাবিদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২২:৫৮ ৪ বার পঠিত