
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে হামলার আগে তার সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণকে বিকৃত করে সম্প্রচার করেছে বিবিসি।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
মিয়ামির ফেডারেল আদালতে দায়ের করা এই মামলায় দু’টি অভিযোগে অন্তত ৫ বিলিয়ন ডলার করে মোট ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি এবং ফ্লোরিডার প্রতারণামূলক ও অন্যায্য বাণিজ্য আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প সোমবার সকালেই মামলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার দাবি, বিবিসি তার মুখে এমন কথা বসিয়েছে যা তিনি বলেননি। তিনি এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারের সন্দেহও প্রকাশ করেছেন।
বিতর্কিত ওই তথ্যচিত্রটি গত বছর ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বিবিসির জনপ্রিয় চলতি ঘটনাপ্রবাহের অনুষ্ঠান ‘প্যানোরোমা’-তে প্রচারিত হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের দেওয়া ভাষণের দু’টি ভিন্ন অংশ এমনভাবে জোড়া লাগানো হয়েছে যাতে মনে হয় তিনি সমর্থকদের সরাসরি ক্যাপিটল হিলে হামলার উসকানি দিচ্ছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবী দলের মুখপাত্র এএফপি-কে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘একসময়ের মর্যাদাপূর্ণ আর এখন কলঙ্কিত প্রতিষ্ঠান বিবিসি ইচ্ছাকৃত, বিদ্বেষপূর্ণ এবং প্রতারণামূলকভাবে ট্রাম্পের বক্তৃতা বিকৃত করেছে, যা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের এক নির্লজ্জ প্রচেষ্টা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিবিসি দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে আসছে, যা তাদের নিজস্ব বামপন্থী রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ।’
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি)’র সম্পাদিত এই ভিডিওটি নিয়ে গত মাসে একটি সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এই বিতর্কের জেরে বিবিসির মহাপরিচালক এবং সংবাদ বিভাগের শীর্ষ নির্বাহী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই ভুয়া তথ্যচিত্র প্রচার করা হয়েছে। ট্রাম্পের ক্ষতি করে নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যেই এমনটি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
বিবিসি অবশ্য মানহানির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
গত মাসে বৃটিশ পার্লামেন্টারি কমিটির সামনে সামির শাহ বলেন, মেমো ফাঁসের মাধ্যমে ভুলটি ধরা পড়ার পর বিবিসির উচিত ছিল দ্রুত তা স্বীকার করা। ওই মেমোটি ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় ফাঁস হয়েছিল।
বিবিসির বিরুদ্ধে এই মামলা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে করা একাধিক আইনি পদক্ষেপের সর্বশেষ উদাহরণ। এর আগে বেশ কিছু মামলায় ট্রাম্প কয়েক মিলিয়ন ডলারের সমঝোতা করতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৬:১৮ ৮ বার পঠিত