অন্যায়ভাবে হত্যা করার ভয়াবহতা

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » অন্যায়ভাবে হত্যা করার ভয়াবহতা
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪



অন্যায়ভাবে হত্যা করার ভয়াবহতা

যে যত দুনিয়ামুখী হয়, শয়তান তাকে তত সহজে পাপাচারে লিপ্ত করে। জাগতিক পদ-পদবী ও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য কিছু মানুষ অবিচার, শোষণ এবং হত্যার পথ বেছে নেয়। দুঃখজনকভাবে, মুসলিম সমাজেও এমন ন্যক্কারজনক চরিত্র দেখা যাচ্ছে।

মুসলিম হয়ে অপর মুসলিমকে হত্যা করা, রক্তপাত ও খুন-খারাবির মতো অপরাধ ঘটানো ভয়াবহ। গত জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞ তারই একটি ঘৃণ্য উদাহরণ। ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নৃশংসতায় শিশু, ছাত্র-জনতা কেউ রক্ষা পায়নি। শত শত তাজা প্রাণ নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছে, আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ। অথচ ইসলামে অন্যায় রক্তপাত ও হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

মানুষের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি এবং স্থলে ও জলে তাদের বাহনের ব্যবস্থা করেছি, উত্তম রিযিক দিয়েছি এবং তাদেরকে আমার বহু সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।’ (সুরা বনি ইসরাঈল ১৭:৭০)

প্রতিটি মানুষের জীবন ও মর্যাদা আল্লাহর কাছে অপরিসীম। এজন্য অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করাকে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অন্যায় হত্যাকাণ্ড হারাম এবং কুফরতুল্য। কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা সেই প্রাণকে হত্যা করো না, যার হত্যা আল্লাহ হারাম করেছেন, তবে (শরীয়ত অনুযায়ী) তার অধিকার প্রমাণ হলে ভিন্ন বিষয়।’ (সুরা বনি ইসরাঈল ১৭:৩৩)

আল্লাহ তাআলা শিরকের নিষেধাজ্ঞার পরই অন্যায় হত্যাকে হারাম ঘোষণা করেছেন। (সূরা ফুরকান: ২৫:৬৮-৬৯)। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলমানকে গালি দেওয়া পাপ এবং তার সঙ্গে লড়াই করা কুফর।’ (সহিহ বুখারি)

হত্যার শাস্তি এবং পরিণাম

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুমিনকে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার চেয়েও গুরুতর।’ (সুনানে নাসায়ী)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘কিয়ামতের দিন খুন হওয়া ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে আল্লাহর কাছে উপস্থিত করবে এবং বলবে, ‘হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে।’ (জামে তিরমিজি) আল্লাহ তাআলা অন্যায় হত্যাকারীর জন্য কঠিন শাস্তি ঘোষণা করেছেন। এমনকি খুনের জন্য তওবা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও খুব ক্ষীণ। (সুরা নিসা ৪:৯৩)

জাহেলী যুগে দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা করা সাধারণ ব্যাপার ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমরা দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তানদের হত্যা করো না। আমি তাদেরকেও রিযিক দিই এবং তোমাদেরও। (সুরা বনি ইসরাঈল: ১৭:৩১)

বর্তমানে কন্যাসন্তান হওয়ার কারণে বা অতিরিক্ত সন্তান এড়াতে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটছে। এটি সুস্পষ্ট হত্যার শামিল। কিয়ামতের দিন এই শিশুদের জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘তোমাকে কোন অপরাধে হত্যা করা হয়েছিল?’ (সুরা তাকবির: ৮১:৯)

বিদায় হজে রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা দেন, তোমাদের রক্ত, সম্পদ এবং সম্মান একে অপরের জন্য হারাম। যেমন এই দিন, মাস এবং স্থান পবিত্র। এটি ইসলামের মৌলিক বিধান, যা মুসলমানদের পারস্পরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

অন্যায় হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র একটি অপরাধ নয়; এটি পুরো মানবজাতির বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল। মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব—সব ধরনের অন্যায়, অবিচার এবং রক্তপাত থেকে নিজেদের দূরে রাখা এবং ইসলামের শান্তির বার্তা প্রচার করা।

বাংলাদেশ সময়: ১১:০৮:২২   ১০৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


বন্দরে মাসুদুজ্জামানের পক্ষ থেকে শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের জন্য দোয়া
মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক
জুলাই যোদ্ধাদের সনদ একটু ক‌ঠিন : উপদেষ্টা শারমীন
বিএনপি ৩১ দফার ভিত্তিতে মানবিক রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে: এস এম জাহাঙ্গীর
দুর্নীতি বন্ধ হলে দেশ স্বনির্ভর হতে সময় লাগবে না: ড. রেজাউল করিম
বন্দরে এড. সাখাওয়াত ‘যারা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করবে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করবেন’
ধর্মীয় মূল্যবোধ মানব চরিত্রকে উৎকর্ষের পূর্ণতায় অভিষিক্ত করে: ধর্ম উপদেষ্টা
দীর্ঘ ১৫ বছর পর সরিষাবাড়ী পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন, নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস
বেনাপোলে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার আটক
পাবনায় কবরস্থান থেকে ২১ কঙ্কাল চুরি

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ