
নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ চাঁদাবাজ প্রতারক ভেজাইল্যা সুলতান মাহমুদ অবশেষে ২০ জুলাই দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গন থেকে আটক হয়েছে। আটকের পর চাঁদাবাজি মামলায় বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে সুলতানকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও উৎসুক জনতা সুলতানকে গণধোলাই দিলে ঘটনাস্থলে থেকে দ্রুত পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নেয়।
জানা যায়, সোনারগাঁ থানার বৈদ্যের বাজার হাড়িয়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়া সরকারের কুলাঙ্গার পুত্র সুলতান মাহমুদ নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট, সাংবাদিক ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা, প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী সহ নানান জনকে হুমকী ধামকী দিয়ে অবৈধ পন্থায় দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদাবাজি করে আসছিল। সুলতান মাহমুদের রয়েছে একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট। জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ সাংবাদিক ও মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনসহ অনুমোদনহীন অনলাইন পোর্টাল দপ্তর বার্তা, সময়ের চিন্তা, উদিয়মান সূর্য, সংবাদ সবসময়, ক্রাইন ইনভেস্টিগেশন টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন মানুষকে প্রতারনার আশ্রয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অপরাধে এবং অপকর্মের কারণে সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি চাঁদাবাজি ও নাশকতার মামলা হয়েছে।
২০ জুলাই ফতুল্লা থানার ৩৯নং জিআর চাঁদাবাজির মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে সুলতান মাহমুদ আটক হয়। পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে নেওয়ার সময় ভুক্তভুগী ও ছবি তোলার সময় সাংবাদিকদের আজেবাজে গালিগালাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকী দেয়। বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে সুলতান মাহমুদের জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সুলতান মাহমুদ এ সময় শুনানীর সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলেও কোনো সাংবাদিকতার প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি আদালতে। আদালত তখন তাকে তিরস্কার করে। সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ অনেক বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সোনারগাঁয়ের প্রথম স্ত্রীকে নির্যাতন করে তালাক দেয়, দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে মানুসিক টর্চার করলেও তাকে নিয়েই সংসার করছে কিন্তু এরই মধ্যে ১ টাকা কাবিনে ঢাকা খিলগাঁয়ের নাজমা সুলতানা নামে এক নারীকে বিয়ে করে বিতর্কের সৃষ্টি করে এবং সেই নারী লাইভে এসে সুলতানের বিরুদ্ধে লোমহর্ষক ঘটনা বর্ণনা করে।
এছাড়াও সাথী নামে এক নারী কবিকে উত্তক্ত করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায়ও অভিযোগ রয়েছে। প্রতারক সুলতানের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-১৬(১)২৫, সোনারগাঁ থানার মামলা নং-৩১(৮)২৩, ও ১৩(৪)২১, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার মামলা নং-৩১(১০)২৩, ফতুল্লা মডেল থানার মামলা নং-৩৯(৭)২৫, নারায়ণগঞ্জ আদালতের কয়েকটি সি.আর মামলা নং-১৬৫/২৫, ৩৭৯/২৪, ১৮৯/২৪, ৪৩১/২৩, ৩৩৩/২০, ১৫০/২৫ সহ আরো অসংখ্য মামলা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সুলতান বাহিনীর চাঁদাবাজ দলের সদস্যদের মধ্যে অলিউল্লাহ জনি, জান্নাতুল ফেরদৌস বাঁধন, আলমগীর, কামাল প্রধান, রুহুল আমিন রাজু, জান্নাতুল মাওয়া মাহিমুন, শান্তা, রুজিনা মাহমুদ সহ আরো কয়েকজন প্রতারক চক্র সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এদিকে সুলতান মাহমুদের গ্রেফতারের খবরে সোনারগাঁয়ে সাধারণ মানুষ আনন্দ উল্লাস করে মিষ্টি বিতরণ করেছে এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জন আনন্দ প্রকাশ করে সুলতান বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য র্যাব, পুলিশ, ডিবির আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে সুলতানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৪:৩৩ ১৩ বার পঠিত