
দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুদ্র কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও টেকসই জীবিকা নিশ্চিত করতে সার্ক কৃষিকেন্দ্র (এসএসি) বাস্তবায়িত প্রকল্প ‘ক্ষুদ্র কৃষকদের জীবিকা উন্নয়ন: মূল্য শৃঙ্খল উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষিভিত্তিক ব্যবসা সম্প্রসারণ’ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
সার্ক ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এসডিএফ)-এর অর্থায়নে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা-এই পাঁচটি সদস্য দেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।
বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ)- তে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালায় প্রকল্পটির অর্জন, অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষুদ্র কৃষকের আয় বৃদ্ধি, মূল্য সংযোজিত কৃষিপণ্য উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা সক্ষমতা শক্তিশালী করা। এর আওতায় কাঁঠাল ও ক্যাসাভা চিপস, গাজর ও মূলার আচার, আদা গুড়া, মোরিঙ্গা-ভিত্তিক পণ্য ও ভার্জিন নারকেল তেলের মতো উদ্ভাবনী পণ্য তৈরি করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ কৃষিপণ্যের অপচয় রোধের পাশাপাশি ক্ষুদ্র কৃষকদের আয়ের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অংশ নিয়েছে আরডিএ, ভুটানে কৃষি বিপণন ও সমবায় বিভাগ, ভারতে এম. এস. স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশন, মালদ্বীপে কৃষি ও প্রাণী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, এবং শ্রীলঙ্কায় কৃষি বিভাগ।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সার্ক কৃষিকেন্দ্রের পরিচালক ড. হারুনূর রশিদ। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প ক্ষুদ্র কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ছয় বছরের অর্জন প্রমাণ করেছে, আঞ্চলিক সহযোগিতা গ্রামীণ উন্নয়নে কার্যকর হতে পারে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আরডিএ’র মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. এ. কে. এম. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, ‘প্রকল্পটি জাতীয় নীতিমালা শক্তিশালীকরণ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও সার্ক দেশগুলোর কৃষিভিত্তিক মূল্য শৃঙ্খল উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।’
বিশেষ অতিথি সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভির আহমেদ তরফদার বলেন, ‘আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।’
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সার্ক ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (এসডিএফ) অফিসার ইনচার্জ ওয়াসিম শাহজাদ। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের সাফল্য দক্ষিণ এশিয়ার গ্রামীণ উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে।’
এ ছাড়া নেপাল কৃষি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের এসএসসি গভর্নিং বোর্ড ও যুগ্ম সচিব শবনম শিবা কোটি বলেন, ‘টেকসই মূল্য সংযোজিত কৃষি ব্যবসার জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা ও নীতিগত সামঞ্জস্য অত্যন্ত জরুরি।’
প্রকল্পের সমন্বয়ক ড. মো. ইউনুস আলী উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রকল্পের অর্জন ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে বলেন, এই প্রকল্প আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ড. নওশের আলী সারদার প্রকল্প সম্পন্ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, যেখানে কৃষকের আয় বৃদ্ধি, ফসল-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি গ্রহণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০০:৪৪ ১৯ বার পঠিত