
দীর্ঘ ৩৫ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে নতুন সূচনা হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- রাকসুর কার্যক্রমের। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদসহ মোট ২৩ জন ছাত্র প্রতিনিধি। পাশাপাশি শপথ নেন সিনেট ও হল সংসদের নির্বাচিত নেতারাও।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব নবনির্বাচিত নেতাদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শপথ নেন ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার, এজিএস সালমান সাব্বিরসহ রাকসুর ২৩ জন কেন্দ্রীয় সদস্য। পাশাপাশি সিনেটের ৫ প্রতিনিধি ও বিভিন্ন হল সংসদের নেতারাও শপথ নেন।
নবনির্বাচিত ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, এই শপথের মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ আবারও জীবিত হলো। রাকসুর অচলাবস্থা কাটিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার- খাবার, পানি, আবাসনসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করব।
জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সময় যে ইশতেহার দিয়েছিলাম, সেটিই হবে আমাদের কর্মপরিকল্পনার মূল ভিত্তি। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
নারী শিক্ষার্থীদের সমস্যার বিষয়ে কথা বলেন সহকারী মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সামিয়া জাহান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের পরিবহন ও নিরাপত্তা সমস্যা সমাধানে আমরা অগ্রাধিকার দেব। আমরা চাই রাকসু হোক নারী শিক্ষার্থীদেরও আশ্রয়ের জায়গা।’
সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাসুমা আক্তার মুমু বলেন, ‘আমরা সমাজ ও পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে চাই। রাকসুর এই প্ল্যাটফর্মটিকে আমরা ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলব।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর রাকসুর যাত্রা শুরু হলো- এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি আশা করি, নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের আস্থার প্রতিফলন ঘটাবেন।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘রাকসু শুধুমাত্র রাজনীতির ক্ষেত্র নয়, এটি হবে নেতৃত্ব, সেবা ও দায়িত্ববোধ গঠনের জায়গা। আমরা প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় পর ২০২৫ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রাণ ফিরে পেল দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক এই ছাত্র সংগঠন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা- রাকসু হোক তাদের অধিকার আদায়ের প্রকৃত মঞ্চ, যেখানে নেতৃত্বের পাশাপাশি থাকবে জবাবদিহিতা ও সেবার মনোভাব।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২২:৩০ ১২৩ বার পঠিত