
সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, ২০২৬ সালে গজারিয়া-মতলব উত্তর সড়কে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে।
আজ বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের মতলব উত্তর এবং মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার সংযোগস্থলে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি।
এসময় সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, প্রকল্প পরিচালক, প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ এবং উভয় প্রান্তের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ সকাল সাড়ে ১০টায় সেতুর মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর হতে শুরু করে চাঁদপুরের মতলব উত্তর পর্যন্ত প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্ট এবং নদীশাসন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
প্রকল্পের প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ— নদীর গভীরতা, স্রোতের গতি এবং ভূতাত্ত্বিক অবস্থার সঠিকতা চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
পরিদর্শনকালে সেতু সচিব বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বৈষম্যহীন, ব্যয় সাশ্রয়ী কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি চাঁদপুরের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার।
তিনি বলেন, বর্তমানে সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে এই অঞ্চলের যে দীর্ঘ এবং সময় সাপেক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা, এই সেতুর মাধ্যমে তা হ্রাস পাবে এবং বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। বিশেষ করে, চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষিজ পণ্যগুলো দ্রুত রাজধানীতে পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা প্রান্তিক চাষি ও ব্যবসায়ীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।
তিনি আরো বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর চাপ কমাবে এবং এই অঞ্চলকে সরাসরি জাতীয় অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বমানের প্রকৌশল ও পরিবেশবান্ধব নকশা অনুসরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ডিটেইলড ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এসময় তিনি মতলব উত্তর অংশের বিদ্যমান সড়কের প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরিদর্শন শেষে সচিব, সেতু বিভাগ, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক, মতলব উত্তরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করেন এবং এই জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে সেতু কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, সেতুটি হবে ১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চার লেন বিশিষ্ট ক্যাবল স্টেইড সেতু, যার স্প্যানের দৈর্ঘ্য বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৩:০৩ ২১ বার পঠিত