মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ভিয়েতনাম, ভাগ্য ঘুরছে বাংলাদেশের

প্রথম পাতা » অর্থনীতি » মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ভিয়েতনাম, ভাগ্য ঘুরছে বাংলাদেশের
বুধবার, ৩ মে ২০২৩



মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ভিয়েতনাম, ভাগ্য ঘুরছে বাংলাদেশের

চীনা তুলায় তৈরি পোশাক রফতানির অভিযোগে ভিয়েতনামের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের ভাগ্য ঘুরে যাচ্ছে। বাংলাদেশে গ্যাপ, অ্যাডিডাস এবং নাইকির মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের অর্ডার বাড়তে পারে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায় অধ্যুষিত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উৎপাদিত তুলা থেকে পণ্য তৈরির ওপর বেশ কিছুদিন ধরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। বিশেষ করে চীনের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি ভিয়েতনাম থেকে পাঠানো পণ্যে জিনজিয়াং প্রদেশের কাঁচামাল ব্যবহারের সত্যতা পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর আগে অবশ্য প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের ৩ হাজার ৬০০টি চালান পরীক্ষা করা হয়।

নিট গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) পরিচালক গাজী মো. শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের দেশে এ ঘটনার একটি প্রভাব পড়বে। যেহেতু অ্যাডিডাস, নাইকির মতো বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো ভিয়েতনামে কিছু অর্ডার কমিয়েছে, সেক্ষেত্রে তাদের বিকল্প হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের এখানে আসবেই।’

নানা সুযোগ-সুবিধার কারণে ভিয়েতনামে বিশ্বের সব দামি ব্র্যান্ডের পণ্য তুলনামূলক বেশি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে দেশটি থেকেই নাইকি অন্তত ২৬ শতাংশ এবং অ্যাডিডাস ১৬ শতাংশ পণ্য কেনে। এ অবস্থায় ভিয়েতনামের ওপর নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ভিয়েতনামে যদি অর্ডারের হার কমানো হয়, তাহলে অবশ্যই সেই অর্ডারগুলো আমাদের এখানে আসবে। সুতরাং, আমরাও চাই তাদের মতো ভুল না করতে। আমরা এখন বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করতে চাই। যাতে করে এ সুযোগ আমাদের হাতছাড়া না হয়।’

ভিয়েতনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, তারা বাংলাদেশেও ঠিক তেমন সুযোগ-সুবিধাই ভোগ করবে বলে জানান সনেট টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াসিন।

এদিকে ভিয়েতনামের মতো নিষেধাজ্ঞার জটিলতা এড়াতে চীনা কাঁচামাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে কারখানা মালিকদের মৌখিক সতর্কবার্তা দিয়েছে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে চীনের কালো তালিকাভুক্ত অঞ্চলের কাঁচামাল ব্যবহার হয়নি - এমন প্রত্যয়নপত্র পাঠানো বাধ্যতামূলক।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভিয়েতনামে যে কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, সে কারণে যাতে বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা না আসে, সে জন্য আমরা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর পক্ষ থেকে মালিক পক্ষকে সচেতন করেছি।’

২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করে ভিয়েতনামকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে ফিরে আসে। তবে ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের রফতানি আয়ের ব্যবধান মাত্র এক থেকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিশ্বের তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে চীন। আর দ্বিতীয় স্থানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রতিযোগিতা করছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। তবে এখন যেহেতু ভিয়েতনাম নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে, তাই সময় হয়েছে বাংলাদেশের জোর কদমে এগিয়ে চলার। আর সে জন্য প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা - এমনটাই বলছেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:০২:০৬   ৯৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দিচ্ছে : অর্থ প্রতিমন্ত্রী
২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন
সেবা দিতে সময় বেঁধে দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়!
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-ইস্টার্ন ব্যাংকের চুক্তি
রূপায়ণ সিটির সঙ্গে ডেলকো বিজনেস অ্যাসোসিয়েটের চুক্তি স্বাক্ষর
ড্যাপ সংশোধন চান আবাসন ব্যবসায়ীরা
একীভূত হতে সোনালী-বিডিবিএলের সমঝোতা স্মারক সই
হিসাব ব্যবস্থায় সংস্কার প্রয়োজন : অর্থমন্ত্রী
পুঁজিবাজারে সূচকের বড় লাফ, ঊর্ধ্বমুখী লেনদেনও
পেঁয়াজ রপ্তানি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল ভারত

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ